Chandrayaan 3, Scientist Anuj Nandi: বুধবার সন্ধ্যায় যখন চন্দ্রযান ৩ এর ল্যান্ডার (বিক্রম) চাঁদে সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ইসলামপুরে ইসরোর বিজ্ঞানী অনুজ নন্দীর বাড়িতে স্কুলের পরীক্ষার চাপ ভুলে দুই স্কুল পড়ুয়া টেলিভিশন সেটের সামনে ঠাঁয়ে বসে, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে টিভি পর্দায়। বাড়ির বড়দেরও অবশ্য একই রকম অবস্থা। তবে টানটান উত্তেজনা পেরিয়ে শেষমেশ ‘এক আকাশ সাফল্য’ এলো ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদে সফল সফ্ট ল্যান্ডিংয়ে।
চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্যে দেশজুড়ে খুসির হওয়া বইছে। তবে বাংলার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের আশ্রমপাড়া এলাকায় যেন উৎসব চলছে! কারণ, চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্যে অবদান রয়েছে এখানকার ‘ভূমিপুত্র’ অনুজ নন্দীরও। দীর্ঘদিন বেঙ্গালুরুতে ইসরোয় কর্মরত ৪৯ বছরের অনুজ। ইসলামপুর হাইস্কুল হয়ে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তরের পর এমটেক ও পিএইচডি করেন অনুজ।
ইসরোয় চন্দ্রযান ৩ এর ল্যান্ডারকে যে ‘প্রোপালশন মডিউল পে লোড’ বয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তার গায়ে SHAPE (স্পেকট্রো পোলামেট্রি অব হ্যাবিটেবল প্ল্যানেট আর্থ) নামে যন্ত্র তৈরির দায়িত্ব ছিলেন অনুজ। এই যন্ত্র চাঁদের পৃষ্ঠের কাছাকাছি ইনফ্রারেড তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিসরে পৃথিবীর স্পেক্ট্রো পোলারিমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করবে।
চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্যের পর অনুজের শ্যালিকা রিংকু নন্দী সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান, “আমি খুব খুশি যে সবকিছু সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। তবে একইসঙ্গে, আমি কিছুটা উদ্বিগ্ন এবং চিন্তিতও। কারণ, আমার ক্লাস নাইনে পড়া ছেলে এবং কেজি ওয়ানে পড়া মেয়ের বৃহস্পতিবার স্কুলে পরীক্ষা আছে। দু’জনেই বুধবার সন্ধে পর্যন্ত একটুও পড়াশোনা করেনি। আশা করি ওদের পরীক্ষাও ভাল হবে।”
অনুজের শ্যালিকা জানান, জুলাই মাসে চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণের পর থেকে অনুজ নন্দীর সঙ্গে কথা হয়নি পরিবারের। তিনি বলেন, “আমরা জানতাম যে, তিনি খুব ব্যস্ত থাকবেন এবং তাই আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করিনি।”
এদিকে, বুধবার রাতে পিটিআই অনুজ নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “এই সাফল্যের পরে সবারই খুব খুশি হওয়া উচিত।” চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্যে খুসির জোয়ারে গা ভাসিয়েছেন ইসলামপুর হাইস্কুল, রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘একাল ও সেকাল’ এর অনেকেই। বাঙালি বিজ্ঞানীর সাফল্যে গর্বিত সারা বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষ।