দুই স্ত্রীকে হারানোর ভয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ।SIR এ নিজের নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে একাধিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এবার দুই স্ত্রীকে হারানোর আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগ। জলপাইগুড়িতে বৃদ্ধের আত্মহত্যার ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
জলপাইগুড়ির জগন্নাথ কলোনির ছিমছাম, সাদামাটা বাড়ি। শুক্রবার দুপুরে এই বাড়ির অনতিদূরেই নরেন্দ্রনাথ রায়ের(৬০) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
পেশায় ভ্যানচালক নরেন্দ্রনাথ। শান্ত, চুপচাপ স্বভাব। সংসারে প্রবল টানাপোড়েন না থাকলেও, খুব যে স্বচ্ছল ছিল, তাও নয়। তবে তাই নিয়ে সেভাবে কোনও সমস্যা ছিল না পরিবারে। তবে স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক মাস ধরেই রীতিমতো দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন নরেন্দ্রনাথ। তাঁদের দাবি, নাগরিকত্ব যাচাইয়ের কাজ শুরু হতেই পুরনো ভোটার লিস্ট খুঁজে দেখেন তিনি। সেখানে নিজের নাম পেলেও স্ত্রী, মিনতি ও বিনোদিনীর নাম পাননি। আর তারপরেই ভীষণ উদ্বেগে পড়ে যান। ৬০ বছর বয়সে এসে দুই স্ত্রীকে হারানোর ভয়ে অস্থির হয়ে ওঠেন।
তালিকায় নাম নেই মানেই যে দেশছাড়া হতে হবে, এমন কোনও মানে নেই, নরেন্দ্রনাথবাবুকে বোঝানোর চেষ্টা করেন আত্মীয়-প্রতিবেশীরা। তাঁরা বোঝান যে, অ্যাপিল করে বা অন্য কোনও আবেদনের মাধ্যমে, বিভিন্ন নথি মারফতও লিস্টে ঠাঁই পাওয়া সম্ভব।
বিষয়টি গড়ায় স্থানীয় পঞ্চায়েতেও। সেখানেও একই আশ্বাস পেয়েছিলেন নরেন্দ্রনাথ। কিন্তু তারপরেও তাঁর মনে ভয় চেপে বসেছিল।
শুক্রবার দুপুরে বাড়ির কাছেই তাঁকে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পরিবার এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই অনুমান করা হচ্ছে। পরিবারের অভিযোগ, 'এসআইআর-এর ভয়েই উনি দিনরাত কাঁটা হয়ে ছিলেন। সেই ভয়ই শেষ করে দিল।'
রাজ্যে বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঠিক এভাবেই SIR এর আশঙ্কায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সেগুলি কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী তরজাও তুঙ্গে। উল্লেখ্য, এদিন শেওড়াফুলিতে SIR আতঙ্কে এক যৌনকর্মীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। সেই খবর বিশদে পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।