ওড়িশার কালাহান্ডির মর্মান্তিক স্মৃতি এবার ফিরে এল বাংলায়। টাকার অভাবে শববাহী গাড়ি না মেলায় মায়ের দেহ কাঁধে নিয়ে হাঁটতে দেখা গেল ছেলেকে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। ঘটনায় রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। এমনকী রাজ্যে সমব্যথীর মতো প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল, সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।
জানা গিয়েছে, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় গতকাল রাতে বছর ৭২-এর এক বৃদ্ধাতে ভর্তি করানো হয় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। আজ সকাল ৮টা নাগাদ মৃত্য হয় ওই বৃদ্ধার। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে জানিয়েও কোনও অ্যাম্বুল্যান্স মেলেনি বলে অভিযোগ মৃতার ছেলের। একইসঙ্গে ভাড়ার অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা ৩ হাজার টাকা চায়। কিন্তু সেই পরিমান টাকা না থাকায় কার্যত বাধ্য হয়েও কাঁধে করে মায়ের দেহ নিয়ে রওনা দেন ছেলে। এরপর একটি এনজিও বিষয়টি জানতে পেরে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে।
এই ঘটনায় হাসপাতাল সুপার জানাচ্ছেন, মৃতার ছেলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এটি অমানবিক কাজ। এক্ষেত্রে হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মীদের নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন সুপার। একইসঙ্গে আগামিদিনে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এদিকে অ্যাম্বুল্যান্স অ্যাসোসিয়েশানের তরফে জানান হয়েছে, মৃতার ছেলে অ্যাম্বুল্যান্স চাইতে গেলে, একজন তাঁর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা চায়। তবে এরপর মৃতার ছেলেকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু পরে দেখা যায় তিনি মায়ের দেহ কাঁধে নিয়েই রওনা দিয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশানের আরও দাবি, হাসপাতালে বিনামূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা রয়েছে, যা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই পাওয়া যেতে। সেক্ষেত্রে কেন তিনি তা করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অ্যাম্বুল্যান্স অ্যাসোসিয়েশান।
অন্যদিকে এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনায় নেমেছেন বিরোধীরা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'অত্যন্ত পেইনফুল। লজ্জা রাখার জায়গা নেই।' পাশাপাশি সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সব ব্যবস্থা আছে, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। টাকা দিতে পারল না, কোনও ব্যবস্থা নেই? একেবারে মর্মান্তিক বিভৎস একটা চেহারা। ভাবা যায় না!' অন্যদকে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহা হাকিমের মন্তব্য, 'এই অমানবিক কাজটা মানুষ হিসেবে কেউ করতে পারে না।'
আরও পড়ুন - বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে ক্যাম্পাস খুলতে চাইলে UGC-র অনুমতি আবশ্যিক