ED-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে মিডলম্যানের ভূমিকা পালনের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর পাশাপাশি ED স্ক্যানারে রয়েছেন পিসি মায়া সাহাও। তিনি বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ED। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতায় CGO কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা দাবি করেছেন, পিসি-ভাইপো মিলে বেনামে বহু সম্পত্তি কিনে রেখেছে। কতটা সত্যি এই দাবি? ভাইপোর 'কীর্তি'-তে কতটা জড়িত পিসি?
কী দাবি জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবার?
চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'পিসি-ভাইপো মিলে টাকা পয়সার গন্ডোগোল রয়েছে। জেল হওয়া দরকার।' দীর্ঘদিন হয়েছে, ছেলের সঙ্গে আর থাকেন না বিশ্বনাথ সাহা। কর্মসূত্রে সাঁইথিয়ায় থাকেন তিনি। আগে বাড়ি গেলেও এখন জীবনকৃষ্ণের সঙ্গে কার্যত মুখ দেখাদেখিই নেই তাঁর। ছেলে জীবনকৃষ্ণের দ্রুত উত্থান চোখে ভাল ঠেকেনি বাবার। এমনকী নিজের বোন মায়া সাহার সম্পর্কেও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে তাঁর। বিশ্বনাথ সাহার বিস্ফোরক মন্তব্য, 'রেড হওয়ার দরকার ছিল। প্রচুর সম্পত্তি করেছে। MLA হয়েই তো এসব করেছে। যা উপদ্রব, আমি তো থাকতেই পারব না যদি ওর কিছু না হয়। জীবন বিধায়ক হওয়ার পর এত এত সম্পত্তি করেছে। মায়াকেও কাউন্সিলর করেছে। ওর বাড়ি ED তল্লাশি প্রয়োজন রয়েছে। প্রচুর সম্পত্তি করেছে ওরা। কিছুই ছিল না, একটা মিষ্টির দোকান ছিল। জীবন বিধায়ক হয়েই তো সব হল। আমার সঙ্গে ওদের বরাবরের দূরত্ব। ওদের বাড়ি এখন আর আমি যাই না। জীবন জামিন পেয়ে আসার পর থেকে আমায় ঢুকতে দেয় না।'
ভাইপোর 'কীর্তি'-তে কতটা জড়িত পিসি?
বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মায়ারখানি সাহা। সোমবার তাঁর বাড়িতে সাড়ে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি চালায় ED। এরপরই তাঁকে তলব করা হয় CGO-তে। পিসি-ভাইপোকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা। মায়া সাহা বলেন, 'জীবন সাহা আমার ভাইপো, রক্তের সম্পর্ক। তবে ও কী করেছে না করেছে, সেটা তো বলতে পারব না।' যদিও ইন্ডিয়া টুডে-র কাছে যে এক্সক্লুসিভ তথ্য এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে জীবনকৃষ্ণের। অভিযোগ, জীবনকৃষ্ণ এবং তাঁর সহকর্মীরা নগদ টাকা ব্যবহার করে অসংখ্য জমি ও আবাসিক সম্পত্তি কিনেছেন। একাধিক নামে ও বেনামে জমি, বাড়ি কিনেছেন। আর এই গোটা দুর্নীতি প্রক্রিয়ায় জীবনকৃষ্ণ সাহার মূল সহযোগী ছিলেন মায়ারানি সাহা।
জেরায় জীবনকৃষ্ণ সাহা প্রথমে দাবি করেন, টাকা তাঁর সঞ্চয় ও বাবার দেওয়া উপহার থেকে এসেছে। কিন্তু তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সাহা ইডিকে জানিয়েছেন, কখনও তিনি ছেলে জীবনকে টাকা দেননি এবং তাঁর ব্যবসাতেও জীবনকৃষ্ণ যুক্ত নয়। বিশ্বনাথ সাহা আরও জানান, এই সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য যে টাকা ব্যবহার হয়েছে, তা 'অযোগ্য প্রার্থী'দের কাছ থেকে অসাধু উপায়ে আদায় করা হয়েছিল জীবকৃষ্ণ।