ফের গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের আন্দিতে তাঁর বাড়িতে হানা দেয় ED। কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসারদের দেখেই পালানোর চেষ্টা করেন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের বড়ঞার বিধায়ক। দোতলা থেকে দেওয়াল টপকে পুকুরে ঝাঁপ দেন তিনি। এরপরই তাঁকে পাঁক-কাদার পুকুর থেকে তুলে নিয়ে আসেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৩ জওয়ান। এবারও নিজের ফোন ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। যদিও নর্দমা থেকে তা উদ্ধার হয়।
দুর্গন্ধময় সেই পানাপুকুর থেকে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে তুলে আনার পর টানা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ED আধিকারিকরা। SSC নবম-দশম নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে ফের গ্রেফতার করা হল। এর আগে এই একই মামলা তিনি CBI-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০২৩ সালের এপ্রিলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল CBI। এই দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া মিডলম্যানদের সঙ্গে বিধায়কের যোগাযোগের অভিযোগ উঠেছিল। বড়ঞার আন্দি গ্রামে তাঁর বাড়িতে টানা ৭২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েছিল CBI। টানা জেরার মুখে ভেঙে পড়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। এরপরই গ্রেফতার করা হয় জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। প্রায় এক বছর জেলবন্দি থাকার পর মুক্তি পান তিনি। ১৩ মাস পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছিলেন।
মুর্শিদাবাদে জীবনকৃষ্ণের বাড়ি ছাড়াও রঘুনাথগঞ্জে তাঁর শ্বশুরবাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছে ED। বীরভূমের সাঁইথিয়ায় তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতেও হানা দিয়েছে ED। তিনি সম্পর্কে জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি হন।
কেন বারবার ফোন ছুড়ে ফেলে দেন তিনি? কী এমন তথ্য লুকনো রয়েছে সে ফোনে? সন্দেহ রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের। জানা গিয়েছে, এদিন নর্দমা থেকে ফোন উদ্ধার করার পর ED জীবনকৃষ্ণের কাছে পাসওয়ার্ড জানতে চায়। জানা গিয়েছে, তিনি সহযোগিতা করতে রাজি হননি। চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত লক খুলতে বাধ্য হন। ওই ফোনে একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলেই অনুমান তদন্তকারী আধিকারিকদের।
আপাতত পানাপুকুর থেকে উদ্ধার করে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ED-র গাড়িতে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিজিও কমপ্লেক্সে। সেখানেই চলবে পরবর্তী পর্যায়ের জিজ্ঞাসাবাদ।