দেখে কে বলবে ওটা ইলিশ নয়। অবিকল ইলিশের মতো দেখতে হলেও আদতে ওটা ইলিশ নয়। খোদ বাংলাদেশে মানুষ বাজারে গিয়ে দরদাম করে একটু সস্তায় বাড়িতে নিয়ে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু ইলিশ মনে করে যেটা ধোঁকা খেয়ে বাড়িতে নিয়ে এলেন, তা আসলে চন্দনা মাছ। এই মাছটি সার্ডিন, চকোরি, কলম্বো কিংবা ডটেড গিজার্ড শাড নামেও বিভিন্ন জায়গায় পরিচিত।
বাঙালি রীতির সুযোগে ইলিশের অবর্তমানে ঢোকে চন্দনা
বিশেষ করে সরস্বতী পুজো, দুর্গাপুজো কিংবা পয়লা বৈশাখে ইলিশের চাহিদা থাকে রীতি অনুযায়ী মাছ খাওয়ার চল রয়েছে বলে। সে সময় টাটকা ইলিশ দূর অস্ত হিমঘরের ইলিশও হাতে ছ্যাঁকা পড়ার মতো দাম থাকে। তখনই সুযোগ বুঝে বাজারে ঢোকে একটু সস্তা এই চন্দনা।
দামে খুব একটা হেরফের হয় না
তবে বেশি দাম কমান না বিক্রেতারা। কারণ তাহলে নকল বলে প্রমাণিত হওয়ার ভয় আছে। বড়জোর কোলাঘাট কিংবা ডায়মন্ডহারবারের ইলিশ বলে চালান। প্রকৃত ইলিশের দাম শুনে একটু সস্তায় চন্দনাচর্চিত হয়ে বাড়ি ফেরেন অনেকেই। গুণে-মানে ইলিশের ধারে কাছে না থাকলেও গরিবের ইলিশ হিসেবে ইলিশের রেসিপিতেই দিব্যি রান্না হয়ে ঢেঁকুর তুলে বাড়ি যান তাঁরা।
ইলিশের সঙ্গে কি পার্থক্য ?
মাছটি সমুদ্রে পাওয়া যায়। আসল ইলিশের সঙ্গে এর পার্থক্য হল এই মাছের গায়ের রং ইলিশের মতো রূপোলি হলেও পিঠ ইলিশের মতো কালচে রংয়ের নয়। চোখ তুলনামূলক বড়। ইলিশের মতো ততটা চ্যাপ্টাও নয়। তবে অভিজ্ঞ না হলে তা ধরা খুব মুশলকিল। আকারে এবং দেখতে অনেকটাই ইলিশের কাছাকাছি হওয়ার মাছ ব্যবসায়ীরা মোটা টাকা মুনাফা অর্জন করেন।
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ধোঁকা খান ইলিশপ্রেমীরা
চন্দনা মাছের গন্ধও খানিকটা ইলিশের মতো। তবে ততটা জোরালো নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। কলকাতা, কিংবা পশ্চিমবঙ্গের বাজারে তো বটেই, বাংলাদেশের চাঁদপুরের বড় বাজার কিংবা ঢাকার বাজারে চোখ টিপে চন্দনা গছিয়ে দেওয়ার লোক অনেক। তাই বাজারে গেলেই ইলিশ বলে হামলে না পড়াই ভাল। কে জানে, চন্দনা মাছেই আপনি ইলিশের স্বাদ খুঁজে বেড়াচ্ছেন না কি !