কীর্তি আজাদ।-বিজেপির ভিডিও থেকে নেওয়া ছবিসংসদের ভেতরে ই-সিগারেট সেবনের অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করল বিজেপি। ভিডিও পোস্ট করে বিজেপির দাবি, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন এক তৃণমূল সাংসদ গোপনে ই-সিগারেটে টান দিচ্ছেন। বিজেপির অভিযোগ অনুযায়ী, ওই সাংসদ আর কেউ নন, বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ।
এই অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আনেন বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। সেদিন bangla.aajtak.in–এর তরফে যোগাযোগ করা হলে কীর্তি আজাদ এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন। তবে বুধবার বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য এদিন একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, সংসদের ভেতরে কীর্তি আজাদ হাতে কিছু একটা নিয়ে টানছেন।
বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, সংসদের মতো সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে বসে এই ধরনের আচরণ অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন। বিজেপির বক্তব্য, 'সংসদে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তার উপর ভারতে ই-সিগারেট আইনত নিষিদ্ধ। অথচ হাতের তালুতে লুকিয়ে ই-সিগারেট ব্যবহার করার সাহস দেখাচ্ছেন একজন সাংসদ। নিয়ম-কানুন যে তাঁর কাছে কোনও গুরুত্বই রাখে না, সেটাই প্রমাণিত।'
বিজেপি আরও দাবি করেছে, ধূমপান হয়তো সব জায়গায় অপরাধ নয়, কিন্তু সংসদের ভিতরে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে এবং তাঁর দলের সাংসদের আচরণ নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে বলেও দাবি করেছে গেরুয়া শিবির।
উল্লেখ্য, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন অনুরাগ ঠাকুর নাম না করেই এক তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে বারবার ই–সিগারেট সেবনের অভিযোগ তোলেন। এই নিয়ে সংসদে তীব্র হইচই শুরু হয়। যদিও আগে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে ধূমপান সংক্রান্ত অভিযোগ উঠলেও, সংসদের ভিতরে বা ই–সিগারেট ব্যবহারের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে কখনও ওঠেনি। এবারের বিতর্ক সেই কারণেই আরও গুরুতর বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিকোটিনযুক্ত ই-সিগারেট মারাত্মকভাবে আসক্তি বাড়ায় এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব এখনও পুরোপুরি জানা না গেলেও, এটি প্রতিষ্ঠিত যে ই-সিগারেটে ব্যবহৃত একাধিক উপাদান ক্যানসার, ফুসফুস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই কারণেই ২০১৯ সাল থেকে ভারতে ই-সিগারেট প্রস্তুত, কেনাবেচা ও সেবন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। আইন ভাঙলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।