
কলকাতায় ভূমিকম্প।Kolkata West Bengal Earthquake: হঠাৎ মেঝেটা কেমন যেন দুলে উঠল। আতঙ্কে রাস্তায় নেমে এলেন উত্তর-দক্ষিণ কলকাতার বহু মানুষ। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ শহরজুড়ে টের পাওয়া গেল ভূমিকম্পের কম্পন। শুধু কলকাতা নয়; মালদা, নদিয়া, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর; উত্তর-দক্ষিণের একাধিক জেলায় অনুভূত হল কম্পন। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫.৭। প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, কম্পনের উৎসস্থল বাংলাদেশের টুঙ্গি।
ঘরের আলমারি, জানলার কাঁচ খানিকটা কেঁপে ওঠায় আতঙ্ক ছড়াল সাধারণ মানুষের মনে। 'সব কিছু হঠাৎ নড়ে উঠল। কিছুক্ষণ বুঝতেই পারিনি কী হচ্ছে', বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে জানালেন ভবানীপুরের বাসিন্দা এক গৃহবধূ।
পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ ও টেকটনিক প্লেট
ভূ-বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সমগ্র এলাকাটাই ভূমিকম্পপ্রবণ। ভারতীয় প্লেট পূর্বদিকে এগিয়ে আসে। আর সেটা গিয়ে ইন্দো-বর্মান প্লেটের সঙ্গে ধাক্কা খায়। অন্যদিকে ইউরেশিয়ান প্লেটও উল্টো দিক থেকে চাপ দেয়।

এই তিন প্লেটের টানাপোড়েনেই একাধিক ফল্ট লাইন তৈরি হয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ এই পুরো অঞ্চলটাই ওই সক্রিয় ফল্ট লাইনের উপরেই দাঁড়িয়ে। ফলে মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্প হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূগর্ভে জমতে থাকা চাপ যখন লিমিট ক্রস করে যায়, তখনই এমন কম্পন হয়। আজকের ভূমিকম্পও সেই টেকটনিক চাপেরই ফল।
অতীতে এই অঞ্চলে বড় ভূমিকম্প হয়েছে
ইতিহাস বলছে, পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ ভূখণ্ড অতীতে বেশ কয়েকবার শক্তিশালী ভূমিকম্পের সাক্ষী থেকেছে। আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে একসময় রিখটার স্কেলে প্রায় ৭ মাত্রার কম্পনে কেঁপে উঠেছিল এই সমগ্র অঞ্চল। উত্তরবঙ্গেও মাঝারি থেকে বড় ভূমিকম্পের নজির রয়েছে।
কত মাত্রার ভূমিকম্প হলে তা সত্যিই ভয়ঙ্কর?
বিশেষজ্ঞদের মতে রিখটার স্কেলে,
৫.০ থেকে ৬.০ মাত্রা: টের পাওয়া যায়, ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম
৬.৫ মাত্রার বেশি: মাঝারি ক্ষয়ক্ষতি
৭.০+: রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ, বিল্ডিং-সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্রাণহানির আশঙ্কা।
শুক্রবারের কম্পনের মাত্রা মাঝারি হলেও সতর্কতা জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ ভূগর্ভে চাপ থেকে যেতেই পারে। আর তার ফলেই আবারও ছোট বা বড় কম্পন দেখা দিতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।