বাড়িতে ঢুকে স্কুলছাত্রী প্রেমিকাকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন! কৃষ্ণনগরের ঘটনা শুনে শিহরিত হচ্ছেন রাজ্যবাসী। কিন্তু ঠিক কী কারণে এতবড় পদক্ষেপ নিল ইশিতা মল্লিকের (১৮) প্রেমিক দেশরাজ সিং (১৯)? কীভাবেই বা আলাপ হয়েছিল দু'জনের?
কাঁচরাপাড়ায় প্রেম
কাঁচরাপাড়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত ইশিতা মল্লিক। পড়াশোনার সুবিধার জন্য কাঁচরাপাড়াতে একটি ঘর ভাড়া করে থাকত সপরিবারে। বাবা দুলাল মল্লিক প্রাক্তন সেনাকর্মী। ইশিতার স্কুলেই ভর্তি হয়েছিল দেশরাজ সিংও। আদতে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাসিন্দা দেশরাজ। বাবা NDRF কর্মী। কর্মসূত্রে তিনি স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে থাকতেন উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরে। কাঁপা-চাকলা পঞ্চায়েত এলাকার ধরমপুরের একটি কলোনিতে ভাড়া বাড়িতে বসবাস তাঁদের। গত বছর একসঙ্গেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছিল ইশিতা ও দেশরাজ। দু'জনের মধ্যে খুল অল্প দিনের মধ্যেই বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। জানা গিয়েছে, বন্ধুত্ব থেকে পড়ে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে এবং প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় তাদের।
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর তরুণী কৃষ্ণনগরে ফিরে যায় এবং কলেজে ভর্তি হয়। তবে ম্যানেজমেন্ট পড়ার টালবাহানায় দেশরাজ ইয়ার ড্রপ করে। স্কুল শেষ হয়ে যাওয়ায় আগের তুলনায় তাদের দেখা সাক্ষাতও কমে গিয়েছিল। ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, সম্প্রতি সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল তাদের। ইশিতা সম্পর্ক থেকে বেরিয়েও আসতে চেয়েছিল। তবে নাছোড়বান্দা ছিল দেবরাজ।
কাল হল ল'পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত?
এরই মাঝে ইশিতাকে ল'কলেজে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর বাবা। কলকাতার একটি কলেজে ভর্তির ফর্মও ফিল আপ করেছিলেন তিনি। মেয়েকে নিয়ে সোমবাই কলকাতায় আসার কথা ছিল দুল্লা মল্লিকের। ব্যস্ত হয়ে পড়ায় একদিন পিছিয়ে দেন কলকাতা সফর।
ঘনিষ্টমহল সূত্রে খবর, প্রথমে কাঁচরাপাড়া থেকে কৃষ্ণনগর ফিরে যাওয়া এবং তারপর কলকাতায় পড়তে আসার সিদ্ধান্তই ইশিতা ও দেশরাজের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছিল। তবে কি লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ চাইছিল না দেশরাজ? ইশিতা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা জানানোর ফলেই কি চরম হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল প্রেমিক? সরাসরি ইশিতার বাড়িতে পৌঁছে তাকে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি করে সে! যুবককে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।