ভোটের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে প্রায় একমাস হয়ে গেল। ইতিমধ্যেই শপথ নিয়ে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বারের সরকার। কিন্তু এবারের বিধানসভায় নেই কোনও বাম বা কংগ্রেসের প্রতিনিধি। কারণ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে বাম (Left Front), কংগ্রেস (Congress) ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (ISF) যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত (Sanjukta Morcha) মোর্চার তরফে শুধুমাত্র একজনই জিতেছেন। তিনি আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকীর ভাই নওশাদ সিদ্দিকী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছেন তিনি। সেক্ষেত্রে এবারের বিধানসভায় সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র প্রতিনিধি নওশাদ সিদ্দিকী। অন্যদিকে পরাজিত হয়েছেন বাম-কংগ্রেসে সমস্ত প্রার্থী। তার মধ্যে রয়েছেন বহু প্রথম সারির নেতারাও।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই ভরাডুবির পর কোন পথে যাবে সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ? এক্ষেত্রে একটা বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের আগে থেকেই আসন বণ্টন নিয়ে মতপার্থক্য দেখা যায় কংগ্রেস ও আইএসএফ-এর মধ্যে। ব্রিগেড সমাবেশে তা একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে। এমনকী সেই মতপার্থক্য নির্বাচন চলাকালীনও বজায় ছিল। মুর্শিদাবাদের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা যায় আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকীকে। যা সেই সময় রীতিমতো শোরগোল ফেলে দেয় রাজ্য রাজনীতিতে। অন্যদিকে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর চুপ থাকেননি অধীরও। ভবিষ্যতে আইএসএফ-এর সঙ্গে আর কোনও রকম সম্পর্ক তাঁরা রাখতে চান না বলেই মন্তব্য করতে শোনা যায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে।
তবে অধীরের এই মন্তব্যের পর আইএসএফ ঠিক কী অবস্থান নিচ্ছে তা এখনও সেভাবে স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে ভোটের ফলাফলের প্রেক্ষিতে বামেদের শীর্ষ নেতৃত্বকে সেভাবে কিছু বলতে শোনা না গেলেও মুখ খোলেন উত্তর ২৪ পরগনার সিপিআইএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য। আইএসএফ-এর সঙ্গে বামদের জোট নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও কার্যত প্রশ্ন তোলেন তিনি। অন্যদিকে কেউ কেউ আবার বলতে শুরু করেন, এই জোট থেকে শুধুমাত্র লাভবান হয়েছে আইএসএফ। সেক্ষেত্রে এই সমস্ত ঘটনা থেকেই সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। এখন দেখার বাস্তবেই আগামিদিনে কোথায় দাঁড়ায় সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ।