কামারহাটির নজরুল মঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মিসভায় তৈরি হল তীব্র উত্তেজনার পরিস্থিতি। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিধায়ক মদন মিত্র প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে। মদনের দাবি, সভায় অনেকে অনুপস্থিত, কেউ আবার মাঝপথেই বেরিয়ে গিয়েছে। আর তাতেই মেজাজ হারান প্রবীণ নেতা।
মঞ্চে ছিলেন অভিনেত্রী-বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক নির্মল ঘোষ-সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতারা। কর্মিসভায় ভিড় থাকলেও, মদন মিত্রের অভিযোগ, সায়ন্তিকার বক্তৃতার সময় একের পর এক কাউন্সিলর আসন ছেড়ে বেরিয়ে যান। কয়েকজন নাকি একটানা পাঁচটি কর্মিসভাতেই অনুপস্থিত ছিলেন।
এর প্রেক্ষিতে মদন মিত্র বলেন, 'তৃণমূলের নাম আর কাউন্সিলর পদ সরিয়ে দিলে, এলাকায় কুকুরও আপনাদের কামড় দেবে। এখনই যদি তৃণমূলের জামাটা খুলে নেওয়া হয়, কী হবে তখন ভাবুন।'
তিনি আরও বলেন, 'যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দেন যে কামারহাটিতে তৃণমূল নেই, তখন কী করবেন আপনারা?'
শুধু তাই নয়, একাধিক কাউন্সিলরকে ‘হরিদাস পাল’ বলেও তিরস্কার করেন তিনি।
এরপরেই মদন মিত্র দাবি করেন, 'এই কর্মিসভায় যাঁরা আছেন, তাঁদের ৪০ শতাংশই তৃণমূলের দেওয়া চাকরি করেন। যাঁরা চাকরি পাননি, তারা কী ভাবছে, সেটাও ভাবা দরকার।' মদন মিত্রের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বিজেপি এই ইস্যুতে তৃণমূলকে একহাত নিয়েছে। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, 'ব্রাত্য বসুও আগে মেনে নিয়েছিলেন। একই কথা মদন মিত্র বললেন। বোঝাই যাচ্ছে, তৃণমূল মানে চাকরি বিক্রি করা সরকার। এবার নিজেদের লোকেরাই বলতে শুরু করেছেন। তৃণমূল যে চাকরিটা দিয়েছে সেটা স্মরণ করিয়ে দিতে হচ্ছে।'
তবে মদন মিত্র জানান, তাঁর বক্তব্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে কেউ অভিযোগ জানালে তাঁর আপত্তি নেই। তবে এর পাশাপাশি অভিযোগকারী নিজে ওয়ার্ড অফিসে কতটা উপস্থিতি, সেই তথ্যটাও সামনে আনা উচিত -দাবি মদনের।
তৃণমূলের অন্দরমহলে এই বক্তব্য ঘিরে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে। মদন মিত্রের মতো সিনিয়র নেতার এমন ক্ষোভ প্রকাশে দলের অস্বস্তি বাড়ছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।