মাধ্যমিকে আশানুরূপ রেজাল্ট না হওয়ায় আত্মঘাতী ছাত্র। শুক্রবার সকালে পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরেই এক কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে। মৃত ছাত্রের নাম ঋতম ঘোষ। গোপীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার মৃত্যু ঘিরে শোকস্তব্ধ এলাকা।
সূত্রের খবর, ঋতম চলতি বছর শ্রী অরবিন্দ বিদ্যামন্দির থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। তার ফলাফল প্রকাশ হতেই জানা যায়, সে ৩৪৭ নম্বর পেয়েছে। পরিবারের দাবি, এই নম্বর তার প্রত্যাশার তুলনায় অনেকটাই কম ছিল। ফলাফল দেখার পরেই সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, ঘটনার সময় ঋতম বাড়িতে একাই ছিল। মা গিয়েছিলেন একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে। বাবা ছিলেন বাইরে। এমন সময়, কেউ বাড়িতে না থাকার সুযোগে সে নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয় বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান।
ঋতমকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই মৃত্যুর খবরে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। তার সহপাঠী, আত্মীয়-পরিজন এবং পাড়া-প্রতিবেশী শোকস্তব্ধ।
ঋতমের পরিবারও এই ঘটনার পর ভেঙে পড়েছে। পরিবারের বক্তব্য, সে বরাবরই ভালো রেজাল্ট করত। কিন্তু এবার প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় সে হয়তো মানসিক চাপে ছিল। কেউ বুঝতেও পারেনি যে সে এমন কিছু করতে পারে।
ঘটনার খবর ঋতমের স্কুলে পৌঁছাতেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে নেমে আসে গভীর দুঃখের ছায়া। স্কুলের শিক্ষক গৌতম জানা জানান, 'ও খুবই ভালো ছাত্র ছিল। নম্বর একটু কম হয়েছে বলে এত বড় সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা কল্পনাও করিনি।'
এই মর্মান্তিক ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে পরীক্ষা ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের ওপর তৈরি হওয়া মানসিক চাপ নিয়ে। অভিভাবক ও শিক্ষকদের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মত মনোবিদদের।
উল্লেখ্য, এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ও মাধ্যমিকে সফলদের পাশাপাশি, যারা ভাল ফল করতে পারেনি, তাদেরও উৎসাহ দেন। তিনি লেখেন, 'যারা আজ ভালো ফল করতে পারোনি তাদের বলব: হতাশ হয়ো না। চেষ্টা করো। আগামীদিনে সাফল্য আসবেই।'