নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে সন্দেশখালিকে এক বন্ধনীতে রাখতে চাইছে বিজেপি, এই নিয়ে এ বার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বাঁকুড়ার খাতরার সভায় মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'সিঙ্গুর, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, নন্দীগ্রাম, খাতরা, খাতরা, একেকটা জায়গার একেকটা চেহারা আছে। একটার সঙ্গে একটার তুলনা করে নিজেরা হিংসা বাধিয়ে ভুল করবেন না।' বস্তুত, সন্দেশখালি এবং নন্দীগ্রামকে এক করে দেখার চেষ্টা করছে, এমন আভাসই পাওয়া গিয়েছে বিজেপি নেতাদের গলায়। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, 'দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম হতে চলেছে সন্দেশখালি।’ বুধবার মমতা সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সন্দেশখালির সঙ্গে নন্দীগ্রামকে এক করে দেখার চেষ্টার বিরোধিতা করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও।
সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারের দাবিতে ফুঁসছে সন্দেশখালি। শাহজাহান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখল, যৌন নিগ্রহের মতো অত্যাচারের নানা অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। এই আবহে বুধবার বাঁকুড়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'অত্যাচার হোক চাই না। জ্ঞানত ভুলকে প্রশ্রয় দিই না।' সন্দেশখালির নাম নেননি মমতা। তবে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মমতার এ হেন বার্তা আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে। 'ভান্ডার খোলার' হুঙ্কারও শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। মমতা এদিন এ-ও বলেছেন, 'আদিবাসীদের জমি জোর করে দখল করতে দেব না।'
সন্দেশখালির ঘটনায় ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সিউড়ির সভায় ক'দিন আগে মমতা বলেছিলেন, 'সন্দেশখালিতে কেউ কেউ তিলকে তাল করছেন। কোনও মহিলা এখনও এফআইআর করেননি। আইন আইনের পথে চলুক। বিচারের আগে অনেকে অনেক কথা বলছে। আমি পুলিশকে বলেছি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করতে।'মমতা আরও বলেছিলেন, 'একটা ঘটনা ঘটেছে। ইডিকে পাঠিয়েছে প্রথমে, পরে বিজেপি গিয়েছে। আগুন লাগাচ্ছে। যার যার অভিযোগ রয়েছে, অফিসার শুনবে।'
অন্যদিকে, খালিস্তানি-বিতর্কে এদিন ফের সরব হন মমতা। বাঁকুড়ার সভায় মমতা বলেন, 'পাগড়ি পরা দেখলেই খলিস্তানি বলছে'। সন্দেশখালিতে কর্তব্যরত পাগড়িধারী আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংকে 'খালিস্তানি' মন্তব্য নিয়ে বিতর্কে আগেও মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, 'পঞ্জাবি অফিসারের কী দোষ ছিল? সে ডিউটি করছিল। পাগড়ি পরে বলে খালিস্তানি বলে দেবে? মুসলিম অফিসারকে দেখে পাকিস্তানি বলে দেবে?'