বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের (Lalan Sheikh Bogtui) সিবিআই হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার কড়া নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মেঘালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে এক প্রশ্নের জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, "ঘটনার নিন্দা করছি, যদি সিবিআই খুব স্মার্ট-ই হয়, তাহলে কেন মারা গেল? তার স্ত্রী মনে হয় এফআইআর দায়ের করেছেন। আমরাও বিষয়টি তুলবো।"
সোমবার সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনা ছড়ায় গোটা বগটুইজুড়ে। রাতেই ঘটনার সম্পূর্ণ রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠানো হয় বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তও শুরু করেছে সিবিআই (CBI)। এদিকে লালনের মৃত্যুতে আজ রামপুরহাটে সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ দেখতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। সিবিআই-এর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন লালনের স্ত্রী। ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।
সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুকে ঘিরে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন দানা বেঁধেছে। কয়েকদিন আগেই তাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ৬ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। হেফাজতে থাকাকালীনই ৩ দিনের মাথায় মৃত্যু হয় লালনের। ঠিক কী কারণে মৃত্যু হয়েছে লালনের তা এখনও জানা যায়নি। একটি সূত্রের দাবি, বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ পাওয়া যায় লালনের। সোমবার রাতে রামপুরহাটে সিবিআই-এর অস্থায়ী শিবিরে যান পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠীও। এখন দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ বোমা মেরে ও গুলি করে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে। তারপরই হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে বগটুই গ্রামে। রাতেই গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে ভাদুর অনুগামী তথা ছায়াসঙ্গী লালন শেখের নাম। পরে ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিইআই। ঘটনার ৮৯ দিনের মাথায় মোট ১৮ জনের নামে আদালতে প্রথম চার্জশিট জমা করে সিবিআই। চার্জশিটে নাম ছিল লালনের। তবে সেই সময় পলাতক ছিল লালন। গত কয়েকদিন আগে ঝাড়খণ্ডের পাকুরের নরোত্তমপুর থেকে লালনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেদিনই তাকে রামপুরহাট আদালতে পেশ করা হলে ৬ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।