নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবসে শনিবার সকাল থেকেই উৎসবের আবহ ছিল বাংলায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলগিন রোডে সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়িতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা পদযাত্রা, এরপর ভিক্টোরিয়ায় মোদী বরণ। সবই চলছিল নিয়ম মেনে। কিন্তু তাল কাটল সন্ধ্যের অনুষ্ঠানে। মমতার ভাষণের আগে 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য পেশ করেননি মমতা। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
তৃণমূল সুপ্রিমোকে কেন এমন অসম্মানের মুখোমুখি হতে হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহান। তিনি টুইটে লেখেন, "মুক্তিযোদ্ধা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সরকারি কর্মসূচিতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।" এরপর হ্যাশট্য়াগ দিয়ে তিনি লেখেন, সেভ বেঙ্গল ফ্রম বিজেপি।
राम का नाम गले लगाके बोले ना कि गला दबाके । 🙏
— Nusrat Jahan Ruhi (@nusratchirps) January 23, 2021
I strongly condemn shouting of political and religious slogans at Government Functions to celebrate legacy of Freedom Fighter Netaji Subhash Chandra Bose on his 125th birth anniversary celebrations. #SaveBengalFromBJP #Shame
এদিকে নুসরতের এই মন্তব্যর পরই পাল্টা উত্তর দেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। টুইটারে তিনি লেখেন, "বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উৎসবে না গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শনকে অপমান করেছেন। নেতাজির জন্মবার্ষিকীতে ভাষণ না দিয়ে সেই কাজের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন। বাংলা এই অসম্মান মেনে নেবে না।"
ঠিক কী ঘটেছে?
ভিক্টোরিয়ায় নেতাজি স্মরণ অনুষ্ঠানে মমতা ভাষণ দিতে ওঠার আগেই, সভায় উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে থেকে উঠে আসে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান। আর তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে, এর প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্যই রাখলেন না মমতা। পরিস্থিতি শান্ত হতে মুখ্যমন্ত্রী হিন্দিতে বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা সরকারি অনুষ্ঠান। কোনও রাজনৈতিক দলের সভা নয়। এটা সকল রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের অনুষ্ঠান। কলকাতায় এই অনুষ্ঠান আয়োজন করায় আমি প্রধানমন্ত্রী, সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে তাঁকে অসম্মান করা শোভা দেয় না। তাই আমি এর প্রতিবাদে এই অনুষ্ঠানে আর কিছুই বলব না।’
অন্যদিকে, আজতককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনিতা বোস বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদীরা নিজেদের মতো করে নেতাজির জন্ম জয়ন্তী পালন করার চেষ্টা করছেন। প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা বলছেন। সেই দিক থেকে আমি বলবো যদি তাঁকে নিয়ে রাজনীতি না করে এক ছাতার তলায় এসে এই জন্ম জয়ন্তী পালন করা যায় তাহলে সেটা ভালো। তবে সেটা কতোটা হবে জানা নেই. কিন্তু যদি শুধুই রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করা হয় তাহলে বাবার জন্ম জয়ন্তী পালন করার প্রয়োজন নেই।"