রাত পোহালেই মহালয়া। দেবীপক্ষের সূচনা। দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন শুরু। তার আগেই কলকাতার অন্যতম বড় পুজো শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের দুর্গাপুজোর 'সূচনা' করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আজ থেকেই আরজি করকাণ্ডে ফের পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এখনও ক্ষোভের বাতাবরণ রয়েছে। তার মধ্যেই দেবীপক্ষের সূচনার আগেই শারদোৎসবের 'সূচনা' করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, শ্রীভূমিতে ঢাকও বাজালেন মমতা। বললেন, 'আমরা এক বছর অপেক্ষা করে থাকি, মা কখন আসবেন।'
গত কয়েক বছর ধরেই দুর্গাপুজো দেখতে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়ের ছবি মহালয়া থেকেই দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে, কলকাতায় অনেক পুজোর উদ্বোধন মহালয়ার আগেই হয়ে যায়। গত বছর মহালয়ার আগেই পুজো উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবীপক্ষের আগে কেন পুজো উদ্বোধন, তা নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে বিজেপি-সহ বিরোধীদের। তবে এবার উদ্বোধন করেননি মমতা। পুজোর 'সূচনা' করলেন। অন্য দিকে, এবার আরজি করের ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। মহালয়ার দিনও প্রতিবাদ কর্মসূচি রয়েছে। কর্মবিরতি চালাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই আবহে এবার 'পুজোয় আছি, উৎসবে নেই'-এ শামিল রাজ্যবাসীর একাংশ। এহেন প্রেক্ষাপটেই মঙ্গলবার পুজোর সূচনা করলেন মমতা। উল্লেখ্য, আরজি করকাণ্ডে প্রতিবাদের আবহে গত মাসে মমতার 'উৎসবে ফিরুন' মন্তব্য সমালোচিত হয়েছিল নানা মহলে।
মহালয়ার আগে পুজো শুরু হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত জুলাই মাসে মমতা বলেছিলেন, 'এখন তো মহালয়ার দিন থেকেই পুজো উদ্বোধন শুরু হয়ে যায়। এর জন্য আমিই অনেকটা দায়ী। এটা আমারই দোষ। মহালয়ার আগের দিন থেকেই উদ্বোধন শুরু করে দিই। মা আগে চলে আসেন।' পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এই প্রসঙ্গ টানেন মমতা। তিনি আরও বলেছিলেন, 'মহালয়ার আগের দিন থেকেই উদ্বোধন শুরু করে দিই। মা আগে চলে আসেন। সুতরাং মানুষও পুজো দেখতে বেরিয়ে যান। কারণ পুজোটা ভালবাসি আমরা। এই উৎসব সবার।'
অন্য দিকে, এ বছর দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গতবছর ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, গতবারের তুলনায় ১৫ হাজার টাকা বাড়ানো হল অনুদান। আগামী বছরে অনুদানের অঙ্ক ১ লক্ষ টাকা করা হবে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, বিদ্যুতের বিলেও ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে এবার বহু পুজো কমিটিই সরকারি অনুদান ফিরিয়ে দিয়েছেন।