বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা সেরে কলকাতায় ফেরার পথে বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছে। বুধবার কলকাতায় ফেরার পর রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। সেখান থেকে বেরোনের সময় দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, 'আজ মরেই যেতাম। মানুষের আশীর্বাদে বেঁচে গিয়েছি।' এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, 'একটা গাড়ি হঠাৎ ঢুকে পড়েছিল। ভাল ভাবে দেখতে পাইনি। গাড়িটা ২০০ কিমি বেগে যাচ্ছিল। গাড়িটা প্রায় ধাক্কাই মেরে দিত। আমার চালক বুদ্ধিমানের কাজ করেছে। ব্রেক কষেছে। মরেই যেতাম। মাথায় লেগেছে। রক্ত পড়েছে। ফুলে আছে। মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। টনটন করছে। এই নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।' মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, 'ড্যাশবোর্ড মাথায় লেগেছে। আমার গাড়ির কাচ খোলা ছিল। কাচ বন্ধ থাকলে গাড়িটা চুরমার হয়ে যেত।' তবে হাসপাতালে যাচ্ছেন না মমতা। তিনি বলেন, 'মাথা টনটন করছে। ঠান্ডা লাগছে। ওষুধ খেয়েছি। গা বমি করছে। বাড়ি যাব।'এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করে দেখবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, 'পুলিশ তদন্ত করবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।'
ঠিক কী ঘটেছে?
বর্ধমানের গোদার মাঠে বুধবার প্রশাসনিক সভা ছিল মমতার। সভা শেষে আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে কপ্টারের বদলে গাড়িতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতায় ফেরার পথে আচমকাই মমতার গাড়ির চালক ব্রেক কষেন। সেই ঝাঁকুনিতে আঘাত পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি গাড়ি মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের মধ্যে ঢুকে পড়েন। তার জেরেই এই ঘটনা ঘটে।
গত বছরের ২৭ জুন জলপাইগুড়ির ক্রান্তিতে সভা ছিল মমতার। সভাস্থল থেকে হেলিকলপ্টারেল করে বাগডোগরা পৌঁছোনোর কথা ছিল মমতার। মাঝপথে দুর্যোগের মুখে পড়ে কপ্টার। দৃশ্যমানতা কমে গিয়েছিল। ঝড়বৃষ্টিতে বিপজ্জনক ভাবে দুলতে থাকে কপ্টার। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে শালুগাড়ায় সেনার হেলিপ্যাডে জরুরি অবতরণ করে কপ্টার। শালুগাড়ায় সিঁড়ি না থাকায় কপ্টার থেকে নামতে গিয়ে কোমর এবং হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই চোট নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাও করাতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।
অন্য দিকে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক ভাল হয়েছে। সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। ২৬ তারিখ আবার আসব।'