বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় মুখ খুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে এই ঘটনায় অভিষেকের সুরেই দলের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূলনেত্রী। বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, 'যে-ই সরকারে থাকুক না কেন, কেন্দ্র সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করি, এটাই আমাদের অবস্থান।' বাংলাদেশের ঘটনায় গতকাল একই সুর শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের কণ্ঠে। সম্প্রতি, তৃণমূলের অন্দরে অভিষেককে উপমুখ্যমন্ত্রী করার দাবি প্রকাশ্যে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ চর্চা চলছে। এই আবহে বাংলাদেশের ঘটনায় মমতা-অভিষেকের একই সুর উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমরা দু:খিত, মর্মাহত। আমরা কেউই ঘটনাকে সমর্থন করছি না। আমাদের ভূমিকা খুব সীমিত। যেহেতু আমরা আলাদা দেশ। এটা ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিতে পারে।' মমতা আরও বলেছেন, 'কোনও ধর্মের উপরই অত্যাচার মানি না।' এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'যে-ইসরকারে থাকুক না কেন, কেন্দ্র সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করি, এটাই আমাদের অবস্থান।' তিনি বলেছেন, 'বাংলাদেশকে আমরা ভালবাসি। আমাদের ভাষা, পোশাক সবই এক। কোনও ধর্মে ধর্মে বিভেদ হোক, এটা চাই না। তার রেশ কারও উপর পড়ুক, এটা চাই না।' অন্য দিকে, বাংলাদেশের ঘটনায় কেন্দ্রকেও নিশানা করেছেন মমতা। বলেছেন যে, কেন্দ্রে যে দল ক্ষমতায় আছে, তারাও একটা ধর্মের উপর প্রতিহিংসামূলক আচরণ করে। এটা ঠিক নয়।
বুধবার বাংলাদেশের ঘটনা প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, 'বাংলাদেশ রাজ্যের বিষয় নয়, আন্তর্জাতিক বিষয়। যে কোনও আন্তর্জাতিক বিষয়ে যে অবস্থান কেন্দ্র সরকার নেবে, সেটাকে দেশের স্বার্থে দলগত ভাবে সমর্থন করবে তৃণমূল।' এরপরেই অভিষেক বলেন, 'যে ঘটনা ঘটেছে, তা একেবারে সমর্থনযোগ্য নয়, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়।'
প্রসঙ্গত, সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে হিন্দু সন্ন্যাসীকে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন না জানানোয় সন্ন্যাসীকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন সে দেশের হিন্দুদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, 'বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, যাতে হিন্দু-সহ সমস্ত সংখ্যালঘুর সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হয়।' হিন্দুদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথাও উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি।