আজ ২রা মে। গতবছর এই দিনেই তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। প্রবল বিজেপি ঝড়কে প্রতিহত করে আরও একবার বাংলাকে নিজেদের দখলেই রাখতে সক্ষম হন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুধু তৃণমূলের তৃতীয়বার বঙ্গ বিজয়ই নয়, আরও বেশকিছু দিক থেকেই ওইদিনটি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। একবার ফিরে দেখা যাক, ওইদিন বাংলার বুকে ঘটে যাওয়া তেমনই ৫ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
১০০-র নিচেই আটকে গেল বিজেপি - আবকি বার ২০০ পার, এই স্লোগান তুলে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইতে নেমেছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ গেরুয়া শিবিরের তাবড় নেতারা লাগাতার প্রচার চালান বঙ্গের বুকে। কিন্তু তারপরেও শেষ রক্ষা হল না। ভোটের ফল বেরোতেই দেখা গেল ১০০-ও পেরোতে পারেনি বিজেপি (BJP)। আটকে গিয়েছে তার অনেক আগেই মাত্র ৭৭-এ।
নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয় - ২০২১ সালের বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল নন্দীগ্রাম (Nandigram)। কারণ ওই কেন্দ্র থেকেই নির্বাচনী লড়াইতে নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতার প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন তাঁর একসময়ের সহযোগী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তাই স্বভাবতই নন্দীগ্রামের ফলাফল কী হবে, তা জানতে উৎসুক ছিলেন আপামর বঙ্গবাসী তথা গোটা দেশের সংবাদমাধ্যম। ফলাফলের দিন সকাল থেকেই কখনও দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে তো কখনও আবার এগিয়ে শুভেন্দু অধিকারী। এরপর একসময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখা যায় নন্দীগ্রামে জয়ী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পরেই বদলে যায় ছবিটা। নন্দীগ্রামে জয়ী ঘোষণা করা হয় শুভেন্দু অধিকারীকে।
হুইল চেয়ার ছাড়লেন মমতা - নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনই সন্ধ্যায় পায়ে চোট পান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। পায়ে প্লাস্টার নিয়ে হুইল চেয়ারে বসেই গোটা বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার সারেন তিনি। এরপর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন বিকেলে হুইল চেয়ার ছেড়ে আবারও হাঁটতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
বাম ও কংগ্রেস শূন্য - গত বিধানসভা নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চার নামে একসঙ্গে লড়াইতে নেমেছিল বামফ্রন্ট (Left Front), কংগ্রেস (Congress) ও ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ (ISF)। তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালায় সংযুক্ত মোর্চা। কিন্তু ফলাফল ঘোষণা হতেই দেখা যায়, সংযুক্ত মোর্চাকে গ্রহণ করেননি মানুষ। আর শুধু তাই নয়, নির্বাচনে কোনও আসন জিততে পারেনি বাম এবং কংগ্রেসও। অর্থাৎ ভোটের ময়দানে খালি হাতেই ফিরতে হয় তাদের।
জয় পেল আইএসএফ - বাম ও কংগ্রেস কোনও আসন জিততে না পারলেও প্রথমবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেই খাতা খুলল সংযুক্ত মোর্চার তৃতীয় শরিক ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। ভাঙড় কেন্দ্র (Bhangar Vidhan Sabha) থেকে জয়ী হন আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন - অ্যালোভেরা ব্যবহার করেন? এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি থেকে সাবধান