হিংসার ঘটনার তিন সপ্তাহ পর মুর্শিদাবাদে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বহরমপুর থেকে ধুলিয়ানে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সামশেরগঞ্জে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশাপাশি সুতিতে প্রশাসনিক সভা করবেন। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁদের হাতে তুলে দিতে পারেন আর্থিক সাহায্যও। সুতির বিডিও অফিসে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। সেখানে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় শহিদ জওয়ানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সুতির প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকেই গোটা মুর্শিদাবাদ জেলার জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা এবং শিলান্যাসের কর্মসূচি রয়েছে তারপর।
মুর্শিদাবাদে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে কী ভাবে অশান্তি হল, তা নিয়ে শীঘ্রই সত্য-তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বহরমপুরে পৌঁছে যাঁরা দাঙ্গা করছেন, তাঁদের ‘বাংলার শত্রু’ বলে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তোপ দেগেছেন বিরোধীদের বিরুদ্ধেও।
মমতা বলেন, ‘কিছু মানুষ ধর্মীয় নেতা সেজেছেন। ধর্মের নামে তাঁরা বিধর্মের কথা বলেন। পালে বাঘ না পড়লেও বাঘ বাঘ বলে চিৎকার করেন। তাঁরাই অশান্তি করেন। তাঁরা বাংলার শত্রু।’ গত এপ্রিল মাসে ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জ এলাকায় অশান্তির ঘটনা ঘটে। মুর্শিদাবাদের অশান্তির ঘটনা পরিকল্পিত বলেও মত মমতার। বহিরাগতরা মুর্শিদাবাদে এসে অশান্তি তৈরি করেছে বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘মূলত মুর্শিদাবাদের দুটো পার্টে গোলমাল হয়েছে। সেটা কারা করেছে, কী ভাবে পরিকল্পনা করেছে, আমি সব ক্রস চেক করেছি।’ বিজেপির দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘দুটি-তিনটি লোক আছে, যারা এই গন্ডগোল পাকাচ্ছে। তারা নাকি বিরাট বিরাট ধর্ম নেতা। অনেক বড় বড় কথা বলেন। তাদের আর্থিক উৎস বিজেপি বলে দেবে।’
অন্যদিকে, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও জেলাশাসককে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সরকারি অফিস পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত দফতরে ঠিকমতো কাজ হচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখেন।
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে অশান্তির ঘটনায় মৃতদের পরিবারের লোকেরা বিধাননগরে রয়েছেন। তাঁরা ইতিমধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওঁদের বাড়িতে গিয়েও আমার দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু বিজেপি ওঁদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বিজেপির বোঝা উচিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যারা করে, তাদের আমরা অপরাধী বলি।’