আসানসোলে আবর্জনার স্তূপে মিলল একগুচ্ছ ভোটার কার্ড। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে সালানপুরে। এলাকার একটি জঙ্গলের গাছতলার আবর্জনার স্তূপ থেকে এই ভোটার কার্ডগুলি উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। স্থানীয় বাসিন্দারা আবর্জনার মধ্যে ফেলে পড়ে থাকা ভোটার কার্ড দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি খবর দেন পুলিশকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার কার্ডগুলির বেশিরভাগের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে আসানসোলের চিত্তরঞ্জন এলাকার। কার্ডগুলির উৎস এবং কেন এইভাবে ফেলে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
স্থানীয়দের দাবি, এগুলি সম্ভবত ভুয়ো ভোটার কার্ড, তাই দুষ্কৃতীরা গোপনে সেগুলি এখানে ফেলে দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে সালানপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সমস্ত ভোটার কার্ড উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া ভোটার কার্ডগুলির সত্যতা যাচাই করতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা এভাবে এত সংখ্যক ভোটার কার্ড ফেলে দিল, তার পিছনে কোনও বড় চক্র রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
যেহেতু পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শিল্পাঞ্চলের অন্তর্গত এই সালানপুর থানা এলাকা, তাই ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসনিক মহলেও আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সালানপুরের বিডিও দেবাঞ্জন বিশ্বাস জানিয়েছেন, ২৫টিরও বেশি ভোটার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিটি কার্ডেই রেল শহর চিত্তরঞ্জনের ঠিকানা লেখা রয়েছে। তিনি জানান, কার্ডগুলি ভুয়ো না আসল, তা খতিয়ে দেখা হবে এবং কীভাবে এগুলি আবর্জনার স্তূপে এল, সেটাও প্রশাসনিক স্তরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। একটা সময়ে রেল শহর চিত্তরঞ্জনে ১৬ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করতেন। কর্মী সঙ্কোচন ও শিল্পের মন্দার কারণে আজ সেই সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। বহু মানুষ কাজ হারিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, সেইসব পরিত্যক্ত পুরনো ভোটার কার্ডই হয়তো কোনওভাবে আবর্জনার স্তূপে এসে পৌঁছেছে। তবে সেগুলি চিত্তরঞ্জন থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরের লোহাট এলাকায় কীভাবে এল, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসক দল ও বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা বিধান উপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, SIR নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে BJP। ভোটার কার্ড উদ্ধারের ঘটনাটিও সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হতে পারে। অন্যদিকে, BJP-র তরফে এই ঘটনায় TMC-কে দায়ী করা হয়েছে। আবর্জনার স্তূপে ভোটার কার্ড উদ্ধারের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। প্রশাসন প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে, তবে আসল-নকল যাচাই ও কার্ডগুলির সঠিক উৎস জানা না গেলে রহস্য কাটবে না।
রিপোর্টার: অনিল গিরি