'SIR'কে কেন্দ্র করে দোলাচলে মতুয়া সমাজের একটি বড় অংশ। বছর ঘুরলেই ভোট। তার আগে 'SIR'কে কেন্দ্র করে দোলাচলে মতুয়া সমাজের একটি বড় অংশ। তৈরি হচ্ছে ক্ষোভ ও উদ্বেগ। দেখা যাচ্ছে, যাঁরা ২০১৯ থেকে লাগাতার বিজেপিকে সমর্থন করেছেন, তাঁরাই এখন কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিতে প্রশ্ন তুলছেন। ফলে পদ্মের সাজানো বাগানেই এবার ঘাসফুল ফোটানোর সুযোগ দেখছে তৃণমূল।
এহেন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেই মঙ্গলবার বনগাঁ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাঁদপাড়া থেকে ঠাকুরনগর পর্যন্ত মিছিল। এরপর ত্রিকোণ পার্কে বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের দাবি, SIR নিয়ে মতুয়া সমাজের দুশ্চিন্তা দূর করতে ও পাশে দাঁড়াতেই পথে নেমেছেন মমতা। অন্যদিকে বিজেপি এটিকে 'মতুয়া আবেগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের প্রচেষ্টা' বলে পাল্টা প্রচার শুরু করেছে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত। SIR নিয়ে দোলাচলে দ্বিধাবিভক্ত মতুয়া সমাজ যে ভোটের আগে রাজনৈতিক পেন্ডুলামে পরিণত হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
এদিন মমতার সফর ঘিরে সবচেয়ে বড় জল্পনা একটাই। তিনি কি ঠাকুরবাড়িতে যাবেন? অতীতে নিয়মিত ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে মতুয়াদের ধর্মীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন মমতা। এবারও কি তিনি সেখানে যাবেন? বিশ্লেষকরা বলছেন, এদিন মমতা ঠাকুরবাড়ি গেলে তা একটি বড় রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখা হতে পারে।
তবে তৃণমূল যে পুরোপুরি অ্যাডভান্টেজে আছে, তা বলা যায় না। বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান পদ নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চলছে। আর সেটা যে বিজেপির জন্য ভাল খবর, তা বলাই যায়। গোপাল শেঠকে কেন্দ্র করে টানাপড়েন চরমে। সূত্রের খবর, এমতাবস্থায়, 'বিদ্রোহী'দের নাকি নিজেদের দলে টানারও চেষ্টা করছে বিজেপি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতার বনগাঁ সফরের মূল লক্ষ্য দু'টি,
প্রথমত, SIR ইস্যুতে উদ্বিগ্ন মতুয়াদের আশ্বস্ত করে ভরসা জয় করা।
দ্বিতীয়ত, দলের অন্দরের গোলমাল সামলে ঐক্যের বার্তা দেওয়া। আর তার মাধ্যমেই বিজেপির ‘ঘোলা জলে মাছ ধরা’র প্ল্যান ভেস্তে দেওয়া।
২০২৬ এর ভোটের আগে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক কোন দিকে ঝুঁকে আছে তা এক কথায় বলা মুশকিল। তবে মমতার মঙ্গলবারের সফরের পর তা অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে বলে মত পর্যবেক্ষকদের। ফলে এদিন মমতা কী বার্তা দেন তার দিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী। পাশাপাশি ঠাকুরবাড়ি এমনতাবস্থায় কী প্রতিক্রিয়া দেন, সেদিকেও তাকিয়ে সকলে।