এর নেপথ্যে রাজ্য সরকারের ভূমিকা ও প্রশাসনিক গাফিলতিই মূল কারণ বলে দাবি করেন শুভেন্দু।লিওনেল মেসির কলকাতা সফর ঘিরে বিশৃঙ্খলা। দায় শুধু আয়োজকের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে চলবে না, এমনই দাবি তুলে রবিবার শাসকদল ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, 'অরূপ বিশ্বাস এবং সুজিত বসুকে গ্রেফতার করতে হবে।' মেসির অনুষ্ঠানে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলা, ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং দর্শকদের ক্ষোভের কেন্দ্রে আয়োজক শতদ্রু দত্ত। কিন্তু এর নেপথ্যে রাজ্য সরকারের ভূমিকা ও প্রশাসনিক গাফিলতিই মূল কারণ বলে দাবি করেন শুভেন্দু।
শনিবারও একই সুরে কথা বলেছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেদিন তিনি দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু ক্ষমা চাইলেই দায় সারা যাবে না। তাঁর দাবি, 'মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।' পাশাপাশি, অনুষ্ঠানের টিকিট কেটে বঞ্চিত হওয়া সমস্ত দর্শককে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অরূপ বিশ্বাস ও সুজিত বসুকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও তোলেন তিনি।
শনিবার হুগলির বলাগড়ে বিজেপির ‘পরিবর্তন সংকল্প যাত্রা’ কর্মসূচিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখান থেকেই তৃণমূল সরকারকে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে আক্রমণ করেন তিনি। সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু বলেন, সল্টলেক স্টেডিয়ামে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে, তার দায় বিধাননগর পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের। তাঁর দাবি, এত বড় আন্তর্জাতিক তারকার উপস্থিতি সত্ত্বেও নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মেসির আসার অনুমোদন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দিয়েছেন। আয়োজন ছিল রাজ্যের ক্রীড়া দফতর ও ক্রীড়া সংস্থার। ফলে পুরো ব্যবস্থাপনার দায় সরকারের উপরেই বর্তায়।
এই ঘটনার পর শনিবার কলকাতা বিমানবন্দরে হায়দরাবাদ যাওয়ার আগে আটক করা হয় আয়োজক শতদ্রু দত্তকে। প্রথমে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানালেও পরে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাওয়েদ শামিম জানান, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিজিপি রাজীব কুমার জানান, দর্শকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে আয়োজকের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস নেওয়া হয়েছে এবং গোটা ঘটনার তদন্তে সরকার-নিযুক্ত কমিটি গঠন করা হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার সকাল থেকেই সল্টলেক স্টেডিয়ামে মেসিকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে ছিল। মেসি মাঠে নামার পর ভিড় ক্রমশ ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে নিরাপত্তার কারণে মেসি দ্রুত মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তারপরই বিক্ষুব্ধ দর্শকদের ভাঙচুর, বোতল ছোড়া এবং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সেই ক্ষোভই এ বার রাজনীতির ময়দানে আরও তীব্র আকার নিল।