সামনেই লোকসভা নির্বাচন। বৃহস্পতিবার দেবকে ফের তলব করে ইডি। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি গরু পাচার মামলায়, ঘাটালের তৃণমূল সাংসদকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর আগেও এই মামলায় ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন দেব।
দেবকে ইডির তলব প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন মিঠুন চক্রবর্তী। অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি দেব ওরকম ছেলে নয়। দেব খুব ভালে মানুষ। বাকিটা দেব বলতে পারবে। এর থেকে বেশি কিছু আর বলার নেই।"
দেবের সঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তীর সম্পর্ক যে খুবই ভাল, একথা প্রায় সকলের জানা। সম্প্রতি মিঠুন অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে হাসাপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন দেব। ২০২২-এর বড়দিনে মুক্তিপ্রাপ্ত 'প্রজাপতি' বক্স অফিসে বিরাট সাফল্য পায়। এই ছবিতে বাবা- ছেলের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল মিঠুন ও দেবকে। সে সময় নন্দনে এই ছবির স্ক্রিনিং না করা সহ আরও নানা বিতর্ক প্রসঙ্গে মিঠুন বলেন, "প্রজাপতি হইহই করে চলছে। দর্শকদের পছন্দ হচ্ছে, এটাই সবচেয়ে বড় পাওনা। নবীনা, পূরবী এই সব হলে ছবি দেখে বড় হয়েছেন। তাই নন্দন আলাদা কিছু নয়। তবে নন্দনের কমিটিতে কারা আছেন, আমি জানতে চাই। যাঁরা অনীক দত্তের ছবি, 'প্রজাপতি'-র মতো ছবি বাতিল করে। নিশ্চয়ই তাঁদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।"
তিনি আরও যোগ করেন, "ছবিটা ভাল ভাবে চলছে, এটাই খুশির খবর। তাই কাউকে কোনও রকম ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়। তবে হ্যাঁ, কেউ ভেবেছিলেন দেবকে ভয় দেখাবেন। দেবকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কারণ তিনিই এখন ঐ পার্টির শেষ কথা। কিন্তু দেব ভয় না পেয়ে অভিনেতা হিসাবে উত্তর দিয়েছে। আর দর্শক যারা ভেবেছিল পরে দেখবে, তারা প্রথম সপ্তাহেই দেখেছে আর তারপর মুখে মুখে এই ছবির প্রচার করেছে। এটা অশনি সংকেত। মানুষেরা আস্তে আস্তে জাগছে, উত্তর দিচ্ছে।"
আসন্ন নির্বাচনের আগে, গরু পাচার মামলায় ফের দেবকে ইডির তলব এই পর্বে নতুন মাত্রা যোগ করল। এই মামলায় ২০২২ সালে গ্রেফতার করা হয়েছে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা। ২০১৪ সালে প্রথম বার পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে জোড়াফুল প্রতীকে লড়ে সাংসদ হয়েছিলেন দেব। এর পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও ঘাটল থেকে জয়ী হন তারকা সাংসদ।
বর্তমানে দেবকে ঘিরে জোর জল্পনা চলেছে বঙ্গ রাজনীতিতে। দেব আবারও ভোটে দাঁড়াবেন কিনা, এই নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি এবং বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন দেব। এরপরেই দেবের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এর মধ্যেই বর্তমান লোকসভায় সাংসদ হিসাবে শেষ ভাষণ দেওয়ার সময় ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেন দেব। দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরার পর দেব বলেন, "দিদিকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি। আমার মনের কথা দিদিকে বলেছি। সত্যি জানি না ২০২৪ সালে কী হবে। আমি দাঁড়াব কি দাঁড়াব না, প্রশ্নের মুখে। নিশ্চয়ই আমার মাথার মধ্যে কিছু একটা চলছে। মিথ্যা বলব না। আমি হয়তো না-ও দাঁড়াতে পারি।" দেবের বক্তব্য ঘিরে ক্রমেই জল্পনা দানা বাঁধে। এরপরই গত শনিবার প্রথমে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গ দেখা করেন দেব। এই নিয়ে আলোচনার মধ্যেই দেবকে ফের তলব করল ইডি।