দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার (ডিএসডিএ) নতুন প্রকল্পের অংশ হিসেবে দিঘায় গড়ে উঠছে একটি অনন্য নেচার পার্ক। জগন্নাথ মন্দির দর্শনের অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করতে মন্দিরের উল্টোদিকে ঝাউবনে ঘেরা বনাঞ্চলে তৈরি হচ্ছে এই পার্ক। প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকদের জন্য এটি এক নতুন আকর্ষণ হতে চলেছে।
ডিএসডিএ জানিয়েছে, আগামী ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হওয়ার কথা। সেই দিনেই নেচার পার্কের প্রাথমিক অংশ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
নেচার পার্কের বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য
নেচার পার্কের প্রবেশদ্বারে ইতিমধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে দুটি জিরাফের মডেল, যা পর্যটকদের স্বাগত জানাবে। পার্কের মধ্যে সুদৃশ্য পেভার ব্লক দিয়ে তৈরি হচ্ছে হাঁটাপথ, যেখানে পর্যটকরা প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে পারবেন। এছাড়াও থাকছে কংক্রিটের বসার জায়গা ও পাখিদের জন্য ঝুলন্ত খাঁচা এবং খাবারের ব্যবস্থা।
পার্কের মূল আকর্ষণ হিসেবে তৈরি হবে একাধিক জলাশয়, যা পাখিদের জন্য আবাসস্থল হিসেবে কাজ করবে। ইতিমধ্যেই ছোট জলাশয়গুলো পরিষ্কার করা হয়েছে এবং আশপাশের ঝোপঝাড় ছাঁটা হয়েছে। ঝাউগাছ ও অন্যান্য গাছপালায় ভরে ওঠা এই বনাঞ্চলে পাখির কুজন উপভোগ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
পর্যটকদের জন্য বাড়তি সুবিধা
জগন্নাথ মন্দিরের আশেপাশের পরিবেশ উন্নত করার জন্য রাস্তা সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যায়নের কাজ করছে জেলা পূর্ত দফতর। মন্দির থেকে পুরনো জগন্নাথ মন্দির পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে বসানো হচ্ছে পেভার ব্লক। পর্যটকদের বসার জন্য নির্মিত হচ্ছে বিশেষ বিশ্রামাগার।
পরিকল্পনা ও বাজেট
নেচার পার্ক তৈরিতে এক কোটি টাকা বাজেট ধার্য করেছে ডিএসডিএ। বন দফতরের সহায়তায় প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। প্রকৃতি সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিয়েই পার্কের নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে।
উদ্দেশ্য ও প্রত্যাশা
ডিএসডিএ-র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক জানিয়েছেন, "জগন্নাথ মন্দির দর্শন করতে আসা মানুষজন যাতে নেচার পার্কে সময় কাটাতে পারেন, সে জন্যই এই উদ্যোগ। প্রকৃতি ও ধর্মীয় দর্শন একত্রে উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।"
নেচার পার্ক এবং জগন্নাথ মন্দিরের যুগল আকর্ষণে দিঘায় পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকরাও উচ্ছ্বসিত এই উদ্যোগে। প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে দিঘার জগন্নাথধাম ও সংলগ্ন এলাকা আগামী দিনে এক অনন্য পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে, এমনটাই আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।