গত প্রায় দেড় মাস ধরে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালির ঘটনা ঘিরে তোলপাড় রাজনীতি। এই পরিস্থিতিতে সন্দেশখালিকাণ্ডে তদন্ত শুরু করতে পারে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ, সূত্র মারফৎ এমনটাই জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় এফআইআরও দায়ের করা হতে পারে বলে খবর। সূত্রের দাবি, সন্দেশখালিকাণ্ডে একটি 'গোপন ফাইল' কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জোর করে জমি দখল, মহিলাদের উপর অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই নতুন করে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তম, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে। ধৃত প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার। গত শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে শিবপ্রসাদকে। তবে শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। এত দিন পরও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল না, এই নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা।
সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে বিধানসভায় বাজেট বক্তৃতায় মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দেশখালিতে উত্তেজনার জন্য গেরুয়া বাহিনীকেই দুষেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, '১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা মুখে মাস্ক পরে ছবি তুলছে, ধরা পড়েছে। বিজেপির কর্মী। একটা এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আগে টার্গেট শেখ শাহজাহান...কারও ক্ষোভ থাকতে পারে। সরকার পদক্ষেপ করবে...সন্দেশখালিতে আরএসএসের বাসা রয়েছে।'
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর শেষ পর্যন্ত সন্দেশখালিতে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনাস্থলে যান সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাতও। শুভেন্দুকে কাছে পেয়ে নানা ক্ষোভ, অভিযোগের কথা জানান সন্দেশখালির বাসিন্দারা। শাঁখ বাজিয়ে, ফুল ছড়িয়ে শুভেন্দুকে বরণ করেন সন্দেশখালির বাসিন্দাদের একাংশ। পরে ধৃত বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহের বাড়িতে যান শুভেন্দু। সন্দেশখালিতে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, 'সন্দেশখালি মমতার চেয়ার করবে খালি।' আগামী ২৬ তারিখ ফের আসবেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু। সন্দেশখালির বাসিন্দাদের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা বলেন, 'রাতে পুলিশের পোশাক পরে কেউ এলে শাঁখ বাজাবেন। যত মন্দির আছে, মাইক লাগিয়ে রাখবেন। কেউ ঘরে এলেই চোর এসেছে, দস্যু এসেছে বলে ওই মাইকে চিৎকার করতে হবে। সন্ধ্যার পর অচেনা লোক এলে, পুলিশ এলে শাঁখ বাজাবেন।' শুভেন্দু এ-ও বলেছেন, 'চিন্তা নেই। সিবিআই আসছে। শেখ শাহজাহানকে বান্ডিল করব।'