রাজ্যের গণপরিবহণ ক্ষেত্রে বড় খবর। বাতিল হচ্ছে না ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি। রাজ্যের পরিবহণ দফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার থেকে বছরে দু'বার ফিটনেস সার্টিফিকেট করালেই রাস্তায় চলতে পারবে পুরনো বাস। ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করলেই সেই গাড়িকে রাস্তায় চালানোর ছাড়পত্র দেওয়া হবে। সঙ্গে দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্রও লাগবে।
বাস মালিক সংগঠনগুলির দীর্ঘদিনের দাবিকে মান্যতা দিয়েই এই সিদ্ধান্ত। এর আগেই রাজ্য পরিবহণ দফতর নীতিগতভাবে এই বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছিল। এবার সেই যুক্তিকে মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, যদি ১৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়িও ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করে, তাহলে রাস্তায় চলাচল করতে বাধা নেই।
এ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ছ’টি বাস মালিক সংগঠনের আলোচনা হয়েছে। সংগঠনগুলি বছরে দু’বার ফিটনেস সার্টিফিকেট নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। সেই সার্টিফিকেটের জন্য প্রতিবার খরচ পড়বে ১২,৫০০ টাকা, সঙ্গে থাকবে ১০০ টাকার দূষণ পরীক্ষা। প্রতিটি সার্টিফিকেটের মেয়াদ থাকবে ৬ মাস। অর্থাৎ, বছরে দু’বার ফিটনেস টেস্ট করিয়ে রাস্তায় নামতে পারবে পুরনো বাস।
পরিবহণ দফতরের মতে, এই উদ্যোগের ফলে বাস মালিকরা কিছুটা হলেও বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবেন। একই সঙ্গে যাত্রী নিরাপত্তার দিকটিও নজরে রাখা যাবে। বাস মালিকদের পক্ষে অতিরিক্ত বিনিয়োগ ছাড়াই পুরনো গাড়ি চালানো সম্ভব হবে। অন্যদিকে, পরিবেশ দূষণ রোধেও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। কারণ প্রত্যেক গাড়িকে দূষণ পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। পাশাপাশি রাস্তায় বাসের অভাবে যাত্রীদের দুর্দশাও কমবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গোড়ার দিকে পরিবহণ দফতর জানিয়েছিল, বেপরোয়া বাস চালকদের নজরবন্দি করতে আনা হচ্ছে ‘যাত্রীসাথী’ অ্যাপ। কলকাতার ১০টি রুটে পরীক্ষামূলকভাবে এই অ্যাপ চালু হয়েছে। সরকারি বাস তো বটেই, বেসরকারি বাস এবং মিনিবাসের চালকরাও এই ট্র্যাকিং সিস্টেমের আওতায় থাকবেন।
এই ‘যাত্রীসাথী’ অ্যাপের মাধ্যমে বাসের গতি, অবস্থান রিয়েল টাইমে নজর রাখা যাবে। এর ফলে দুর্ঘটনাও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, রাজ্যে পুরনো গাড়ি-বাস নিয়ে পরিবহণ নীতিতে এটি একটি বড়সড় সিদ্ধান্ত। ফিটনেস থাকলে পুরনো বাসও থাকবে শহরের রাস্তায়, বলছে আদালত এবং রাজ্য সরকার—দু’পক্ষই।