scorecardresearch
 

হেরিটেজ তালিকায় নাম তোলার সুযোগ বিশ্বকবির শান্তিনিকেতনের সামনে

ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির প্রতিনিধি দল জুলাই মাসে আসার কথা শান্তিনিকেতনে। তাদের সামনে শান্তিনিকেতনের স্থাপত্য, নির্মাণ, সংস্কৃতিকে তুলে ধরে যেনতেন প্রকারে হেরিটেজ তালিকায় স্থান পেতে এখন মরিয়া বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

Advertisement
শান্তিনিকেতন-হেরিটেজ তকমার অপেক্ষায় শান্তিনিকেতন-হেরিটেজ তকমার অপেক্ষায়
হাইলাইটস
  • বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঐতিহ্যরক্ষায় গাফিলতির অভিযোগ
  • ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দল আসছে শান্তিনিকেতনে
  • তালিকায় নাম তুলে বদনাম ঘোচাতে মরিয়া বিশ্বভারতী

শান্তিনিকেতনে শান্তি নেই

বিশ্বকবির শান্তিনিকেতন নেই বিশ্বের হেরিটেজ তালিকায়। কেন নেই ? তা নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে। এ রাজ্যের রবীন্দ্রানুরাগীদের তথা বিশ্বের রবীন্দ্রপ্রেমীরা বারবারই এই প্রশ্ন তুলেছেন। যার এখনও কোনও সমাধান হয়নি। এমন সৌধ কিংবা বস্তুকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি তালিকায় মনোনয়ন দিয়েছে, যার চেয়ে দেশের প্রথম নোবেলজয়ীর মানসক্ষেত্র তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই লীলাভূমিকে এগিয়ে রাখতে চান অনেকেই। তবু এখনও শিঁকে ছেঁড়েনি শান্তিনিকেতনের ভাগ্যে।

জুলাইয়ে আসছে ইউনেস্কো

এরই মাঝে পুনরায় একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে বিশ্বভারতীর কাছে, নিজের গুরুত্ব ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে তুলে ধরার।  যারা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের ক্ষেত্র কে মনোনয়ন করেন সেই ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির প্রতিনিধি দল জুলাই মাসে আসার কথা শান্তিনিকেতনে। তাদের সামনে শান্তিনিকেতনের স্থাপত্য, নির্মাণ, সংস্কৃতিকে তুলে ধরে যেন তেন প্রকারে হেরিটেজ তালিকায় স্থান পেতে এখন মরিয়া বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

স্মৃতি-স্থাপত্য রক্ষায় ব্যর্থ বিশ্বভারতী

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শান্তিনিকেতনে যেসব স্থাপত্য আছে, সেগুলো দীর্ঘকাল রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। প্রায় ১৫ বছর আগে টিনের ছাউনি দিয়ে রামকিঙ্করের সাঁওতাল পরিবার সহ কয়েকটি স্থাপত্য রক্ষার চেষ্টা করে বিশ্বভারতী। যে বিরাট পরিমান স্থাপত্য আছে এখানে, সেগুলোর গুণগত মান, নান্দনিকতা রক্ষা করে সংস্কার করতে পারে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। তারা ইতিমধ্যে শ্যামলী বাড়িটি সংস্কার করেছে।

সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে শান্তিনিকেতন

কিন্তু কালো বাড়ি , চৈত্য, উদয়ন, কোণার্ক বাড়ি থেকে শুরু করে বহু বাড়ি সংস্কার দরকার। বিনোদ বিহারীর ম্যূরাল বা বহু ভবনের দেওয়ালে ফ্রেসকো অনেক কিছু সময়ের সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা রাজ্য কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার, তারা কখনই ঐতিহ্যময় স্হাপত্য সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণে কোনও আর্থিক সহায়তা করে না। ফলে এই মুহূর্তে প্রায় ৭ কোটি টাকা প্রয়োজন পড়লেও বিশ্বভারতীর হাতে এই খাতে কোনও অর্থ নেই।

Advertisement

হেরিটেজ তকমা পেলে আর্থিক সমস্যা মিটবে

ইউনেস্কো বিভিন্ন স্থানের সমস্ত দিক বিচার করে সেই এলাকাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে সে সব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণও তাঁরা করে। ফলে প্রতিনিধিরা যদি শান্তিনিকেতনের স্থাপত্য থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্র খতিয়ে দেখে তার নির্মাণের ইতিহাস সম্বন্ধে অবগত হন, তবে হয়তো তাঁরা শান্তিনিকেতনকেও ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে যুক্ত করতে পারেন। ভারতে ৩৮ টি এমন ক্ষেত্র আছে যা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত এর মধ্যে ২ টি পশ্চিমবাংলায়।

অভিযোগের দায় থেকে মুক্ত হতে হেরিটেজ চায় বিশ্বভারতী

তাই এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মরিয়া, একদিকে দুর্লভ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়ভার সঠিক সংস্থার হাতে তুলে দিয়ে নিজেদের দায় মুক্ত করা, অন্যদিকে বিশ্বভারতীর বিশ্বজনিনতাকে এই সুযোগে ফের তুলে ধরে বিশ্বের বুকে নিজেদের ইতিহাসকে মেলে ধরা।

অপচয়ের ভাণ্ডার বিশ্বভারতী

কিন্তু বিশ্বভারতী এত বড় সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে কিনা, তা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রাক্তনী থেকে আশ্রমিক, সকলে বলছেন পাঁচিলের পর পাঁচিল দিয়ে কোটি কোটি টাকা যারা কার্যত অপ্রয়োজনীয় কারণে নষ্ট করছেন, তাঁরা ভাবছেন না কোন সম্পদ ঘিরতে এত অপব্যয় ? মূল স্থাপত্য সংস্কার না করে অপচয়ের খেসারত দিতে হবে কর্তৃপক্ষকেই।

 

Advertisement