সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে গিয়ে কাশ্মীরে তুষারঝড়ের কবলে পড়ে মৃত্যু হল দুই সেনা জওয়ানের। তাঁরা বাংলার বাসিন্দা। ল্যান্স হাবিলদার পলাশ ঘোষ মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া রুকুনপুর বলরামপাড়ার বাসিন্দা। আরেকজনের নাম ল্যান্স নায়েক সুজয় ঘোষ। তিনি বীরভূমের রাজনগরের কুন্ডিরা গ্রামের বাসিন্দা। সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে দক্ষিণ কাশ্মীরের গাদোল বনাঞ্চলে বুধবার তল্লাশি অভিযান চলাকালীন তুষারঝড়ের সময় নিখোঁজ হওয়া দুই প্যারা কমান্ডোর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে কোকেরনাগের গাদোলের বনাঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় তুষারধসের কারণে দুই প্যারা কমান্ডোর নিখোঁজ হয়ে যান। তখন থেকে সেনার দুই জওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তাঁদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। ড্রোন, কোয়াডকপ্টার, ইউএভি এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয় তল্লাশিতে। এছাড়াও পায়ে হেঁটে বহু জওয়ান তল্লাশি চালান। যদিও প্রথমে মনে করা হয়েছিল জঙ্গিদের আক্রমণের মুখে পড়েন দুই জওয়ান। কারণ অতীতে গাদোলে অনেকবার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলি বিনিময় হয়েছে। আগেও এখানে জঙ্গিদের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। পরে সেনাবাহিনী জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বলে যে জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের সময় তাঁরা তুষারঝড়ে আটকা পড়েছিলেন।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে বৃহস্পতিবার পলাশের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে অস্ত্র ও একটি ব্যাগ সহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার একই এলাকায় সুজয়কে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সূত্র জানিয়েছে যে মৃতদেহগুলি যেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেই স্থানে সম্প্রতি ২ ফুট তুষারপাত হয়েছে।
সুজয় ঘোষের পরিবারে রয়েছেন বাবা রাধেশ্যাম ঘোষ, মা নমিতা ঘোষ, দাদা মৃত্যঞ্জয় ঘোষ, দাদু বামাপদ ঘোষ এবং ছোট ভাই। সূত্রের খবর, শনিবার দুই জওয়ানের দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হবে। ভারতীয় সেনার কাশ্মীরের চিনার কর্পসের তরফে জানানো হয়েছে, কাশ্মীরের কোকেরনাগে কিস্তওয়ার রেঞ্জে চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে লড়াই করার সময় প্যারা কমান্ডো মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার রুকুনপুরের পলাশ ঘোষ এবং ল্যান্স নায়েক সুজয় ঘোষের সর্বোচ্চ ত্যাগকে সম্মান জানাচ্ছে তারা।