প্রতীকী ছবি রয়েছে ভারতের আধার কার্ড। অথচ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার চেষ্টা করছেন বহু মানুষ। নেপথ্যে SIR আতঙ্ক। বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর সীমান্তে ইন্ডিয়া টুডে-র গ্রাউন্ড রিপোর্টে উঠে এল এমনই কিছু দৃশ্য।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর এলাকা। সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন কিছু মানুষ। তাদের হাতে রয়েছে ভারতের আধার কার্ড। গত জুলাই মাস থেকেই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ যাওয়ার এই প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২০০-৩০০ লোক পেরিয়ে যাচ্ছেন সীমান্ত।
ইন্ডিয়া টুডে-র গ্রাউন্ড রিপোর্টে উঠে এসেছে, এই ব্যক্তিরাই কয়েক বছর আগে বেআইনি ভাবে ভারতে ঢুকে পড়েছিল। কারওই ছিল না কোনও বৈধ নথি। বেআইনি ভাবেই এপারে বসবাস করছিল তারা। তৈরি করে নিয়েছিল আধার ও ভোটার কার্ড। এমনকী, ভোটও দিয়েছেন এদের মধ্যে অনেকেই।
কেস স্টাডি
মিঠু মোল্লা: মা, বোন, ভগ্নীপতি এবং তাঁদের দুই সন্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে এপারে এসেছিলেন। ধামাখালিতে নদী সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন তাঁরা। সাহায্য করেছিল দালাল। বদলে নিয়েছিল মাথা পিছু ৬ হাজার টাকা। এরপর এখানেই থেকে যান মিঠু। তৈরি হয় তাঁর নামে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড। ৩ বার ভোটও দিয়েছেন মিঠু। তবে মা এবং বোনের নামে আধার কার্ড কিংবা ভোটার কার্ড তৈরি হয়নি। মা আনোয়ারা বিবির দাবি, দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকে নথিগুলি পেয়েছে তাঁরে ছেলে। বর্তমানে নিউ টাউনে থাকতেন তাঁরা। ঘুটেকুড়ানি হিসেবে কাজ করতেন মিঠুর মা। বাংলাদেশি এক মেয়েকে ভারতেই বিয়ে করেছেন মিঠু। রয়েছে এক কন্যাসন্তানও। বাংলাদেশে জন্ম হয়েছে তার। অসংগঠিত ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে এখানে কাজ করছিলেন মিঠু। তবে SIR শুরু হতেই তারা বাংলাদেশ চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন সীমান্ত থেকে।
কেস স্টাডি
২০ বছর আগে চোখের চিকিৎসা করাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে এপারে এসেছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা মেহদি হাসান আহমেদ। চোখে দেখতে পান না তিনি। আর কখনও বাংলাদেশে ফেরা হয়নি তাঁর। ২০ বছর ধরে হুগলি জেলার ডানকুনিতে থাকেন তাঁরা। SIR শুরু হতেই তাঁরা বাংলাদেশে ফিরতে চাইছেন। অন্ধ এই ব্যক্তি বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে গানকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চান।
SIR শুরু হতেই একাধিক পরিযায়ী শ্রমিক বাংলাদেশের সাতখিরা এবং খুলনা জেলায় ফিরে যেতে চাইছেন। ইন্ডিয়া টুডে-র প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০ বাংলাদেশিকে সে দেশের সীমান্তরক্ষীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ভেরিফিকেশন করে দেখা হয়েছে তাদের কারও কাছেই বৈধ নথি ছিল না। বায়োমেট্রিকও নেওয়া হয়েছে তাদের।
বসিরহাট জেলা পুলিশের SP হোসেন মেহদি রহমান বলেন, 'এই নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। এই প্রক্রিয়ায় BSF জড়িত। যা হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ হচ্ছে।'