প্রায় ছ’মাস পর স্থায়ী ডিরেক্টর পেল IIT খড়গপুর। ভারতের প্রাচীনতম এই IIT-র ডিরেক্টর পদে বসলেন প্রতিষ্ঠানেরই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বর্ষীয়ান অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী। পাঁচ বছরের জন্য IIT খড়গপুরের দায়িত্ব সামলাবেন এই বাঙালি অধ্যাপক।
গত ৩১ ডিসেম্বর অধ্যাপক বীরেন্দ্রকুমার তেওয়ারির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় বারাণসী IIT-র ডিরেক্টর অধ্যাপক অমিত পাত্রকে খড়্গপুরের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে নিয়ে আসা হয়।
গত বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন খড়্গপুরের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন অমিত জৈন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু IIT খড়্গপুরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তীকে এই প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ করেছেন। ফলে প্রায় ছ'মাস পর স্থায়ী ডিরেক্টর বা অধিকর্তা পেল বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কে এই সুমন চক্রবর্তী?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। ২০০২ সালে IIT খড়্গপুরে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। সুমনের মূল বিষয় ‘ফ্লুইড মেকানিকস অ্যান্ড থার্মাল সায়েন্স’। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন তিনি। ডায়াগনস্টিক, সেন্সিং ও থেরাপিউটিকসের জগতে স্বল্পমূল্যের নানা যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন এই অধ্যাপক।
করোনার সময়ে ভাইরোলজিস্ট অরিন্দম মণ্ডলের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সুমন চক্রবর্তী আবিষ্কার করেছিলেন স্বল্পমূল্যে করোনা পরীক্ষার যন্ত্র ‘কোভির্যাপ’। মাত্র ১টাকায় রক্তাল্পতা নির্ণয়ের জন্য তৈরি করেছেন ‘হিমো অ্যাপ’। মহিলারা যাতে গোপনীয়তা বজায় রেখে যোনিপথের সংক্রমণের পরীক্ষা বাড়িতেই স্বল্প খরচে করতে পারেন, সেই গবেষণাতেও সাফল্য পেয়েছেন IIT খড়্গপুরের এই অধ্যাপক।
স্বল্প খরচে নানা রোগ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্যই চলতি বছরের মার্চ মাসে তিনি পেয়েছেন ইউনেস্কোর পৃষ্ঠপোষকতায় দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের বিশেষ পুরস্কার। ইনফোসিস পুরস্কার-২০২২, শান্তিস্বরূপ ভাটনগর সম্মান পেয়েছেন অধ্যাপক। ২০২৩ সালে পেয়েছেন উচ্চশিক্ষায় ‘জাতীয় শিক্ষক সম্মান’ (রাষ্ট্রপতি পুরস্কার)। ২০২৪ সালে এশিয়ার ‘সেরা ১০০’ বিজ্ঞানীর তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছেন সুমন চক্রবর্তী।
নয়া দায়িত্ব পেয়ে সুমন চক্রবর্তী বলেন,‘এত বড় একটা দায়িত্ব পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই প্রকাশিত ‘কিউএস আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিং-২০২৬’ অনুযায়ী সার্বিক বিচারে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ২১৫-তম স্থান দখল করেছে IIT খড়্গপুর।