পথে রাজমিস্ত্রীরাসারা রাজ্যে দিনভর ঘটে যাচ্ছে নানা ঘটনা। তার মধ্যে কোনও কোনও ঘটনা আলাদা করে স্থান করে নেয় সংবাদ শিরোনামে। হয়ে ওঠে চর্চার বিষয়। যেমন এই প্রতিবেদনে আপনাদের এমন একটি ঘটনা জানাব, যেটিও ইতিমধ্যেই চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। বালির অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধি এবং জোগান সংকটের ফলে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন রাজমিস্ত্রি ও শ্রমিকরা, অভিযোগ এমনটাই।
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় বালি পাওয়া যাচ্ছে না, আবার যেখানে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে কিনতে হচ্ছে আকাশছোঁয়া দামে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে বালি মাফিয়াদের মাধ্যমে চড়া দামে পাচার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বালি। ফলে সাধারণ ও গরিব মানুষের পক্ষে সেই বালি কেনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘটনাস্থল বীরভূমের রাজনগর। অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে বালির অভাবে রাজনগর ব্লকের অধিকাংশ রাজমিস্ত্রি ও শ্রমিকের কাজ কার্যত বন্ধ। ফলে এবার রাজনগর BDO–কে ডেপুটেশন দিল রাজনগর রাজমিস্ত্রি কল্যাণ সমিতি।
ডেপুটেশন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সমিতির সভাপতি শেখ ইসলাম, সম্পাদক মতি মহম্মদ শা-সহ সংগঠনের একাধিক সদস্য। তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজমিস্ত্রি ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও। রাজনগর গোহাট প্রাঙ্গণ থেকে ব্যানার–ফেস্টুন হাতে এক প্রতিবাদ মিছিল বের হয় ও রাজনগর বাজারসহ বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে। স্লোগানে স্লোগানে বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন সংগঠনের কর্মীরা। অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারি কম থাকায় রাতেই বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমের সামনে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক জানান,'গরিব মানুষের পক্ষে এই দামে বালি কেনা সম্ভব নয়। কাজের অভাবে শ্রমিক পরিবারগুলো না খেয়ে জানে শেষ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।'
ডেপুটেশন জমা দেওয়ার পর সমিতির কোষাধক্ষ্য বাপি দাস সাংবাদিকদের বলেন, 'BDO মহাশয় আমাদের সমস্যার কথা শুনেছেন এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, কবে সেই আশ্বাস বাস্তবে পরিণত হয়।'
এক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দাবি, অবিলম্বে বালির দাম নিয়ন্ত্রণ এবং বেআইনি পাচার বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে। নয়তো সমস্যার জেরে আরও অনেকের জীবিকা সংকটে পড়বে। এখন দেখার এই পরিস্থিতিতে কী ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।
রিপোর্টার-শান্তনু হাজরা