চলে গেলেন 'রাজা'মশাই। ৯০ বছর বয়সে প্রয়াত বীরভূমের (Birbhum) রাজনগরের রাজ পরিবারের শেষ রাজা রফিকুল আলম খান (Rafiqul Alam Khan)। যদিও ফেকু মিঞা নামেই তিনি বেশি পরিচিত। তবে তিনি যেমন তেমন রাজা ছিলেন না, তিনি ছিলেন নবাবী রাজা। এবার মনে হতেই পারে, নবাব হলে রাজা কেন? এর নেপথ্য়ে রয়েছে বাংলার এক সুপ্রাচিন ইতিহাস। যার শিকড় সেই সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গেও যুক্ত।
শোনা যায় ৪০০ বছর আগে অবিভক্ত বাংলার রাজধানী ছিল বীরভূমের রাজনগর। মুর্শিদকুলি খাঁ জনসেবার স্বীকৃতি হিসেবে তাঁর দেওয়ানদের রাজা উপাধি দিয়েছিলেন। সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি আলিনকি খাঁর বংশধরই হল বীরভূমের রাজনগরের এই রাজপরিবার। আর সেই রাজ পরিবারেরই শেষ রাজা ছিলেন ফেকু মিঞা।
রাজপাট কবেই চলে গিয়েছ। তবুও এলাকার মানুষ বিশেষ সমীহ করতেন ফেকু মিঞাকে। শোনা যায়, এলাকায় কারও কোনও সমস্যা বা কারও মধ্যে বিবাদ হল তাঁরা পুলিশের কাছে না গিয়ে, যেতেন ফেকু মিঞার কাছে। তিনিই আলোচনার মাধ্যমে দুপক্ষকে সমস্যার সমাধান করে দিতেন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ফেকু মিঞার প্রয়াণে এক অভিভাবককে হারালেন রাজনগরবাসী।
আর শুধু স্থানীয় মানুষের সমস্যার সমাধানই নয়, সারা জীবন সম্প্রীতির বার্তাই দিয়ে গিয়েছেন রফিকুল আলম খান। এক সময় বক্রেশ্বর থেকে ময়নাডাল পর্যন্ত এলাকায় বহু মন্দির তৈরির জন্য জমি বিতরণ করেছিল এই রাজ পরিবার। প্রজাদের সেবার পাশাপাশি হিংসা ও হানাহানিকে রোখাই ছিল এই রাজ পরিবারে অন্যতম উদ্দেশ্য। পূর্ব পূরুষদের দেখান পথেই সারাজীবন চলে এবার পরপারের পথে পাড়ি দিলেন 'রাজা' রফিকুল আলম খান।