ঘর থেকে বাইরে আসতে হচ্ছে লাঠি হাতে। না হলেই আক্রমণ। হনুমানের অত্য়াচারে অতিষ্ঠ পূর্ব বর্ধমানের গোকুলগ্রাম আর তার আশপাশের অঞ্চল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশির ভাগ আক্রান্ত মহিলা ও শিশুরা। এখনও পর্যন্ত আহত প্রায় ২৫ জন। বাইরে বেরোলেই সঙ্গী লাঠি। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার আবুঝাটি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোকুলগ্রাম ও পাশের গ্রামের মানুষের ঘুম কেড়েছে একটি হনুমান। হনুমানের তাণ্ডবে গত এক মাস ধরে ভয়ে ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
হিংস্র হনুমানের আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন গ্রামের কমবেশি ২৫ জন। এমনকি বুধবার রাতেও এক বৃদ্ধাকে বাড়িতে ঢুকে আক্রমণ করে তাঁর হাতের বেশ কিছুটা মাংস খুবলে নেয় কামড়ে। তিনি চিকিৎসাধীন। বাকিদেরও চলছে ইনজেকশন।
গ্রামবাসীদের কথায়, একমাস ধরে বেশ কয়েকটি বাঁদর গ্রামের মধ্যে উৎপাত করে বেড়াচ্ছে। তার মধ্যে একটি বাঁদর ক্ষেপে গিয়ে মানুষকে যত্রতত্র আক্রমণ করছে।
বুধবার রাতেও এমনই একটি ঘটনা ঘটে। এক বৃদ্ধাকে বাড়ির ভেতরে ঢুকে কামড়ে হাতের মাংস তুলে নেয়। কুলিনগ্রামের বাসিন্দা খালেদা বিবি মল্লিক জানান, একমাস ধরে বাঁদরের উৎপাত চলছে। থানায় জানানো হয়। বন দফতরের কর্মী ও পুলিশ এসেওছিল।
কিন্তু হানুমানটিকে ধরতে অসমর্থ হন। এখন অবস্থা এমন যে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। মহিলাদের দেখলেই গাছ থেকে আচমকা নেমে এসে আক্রমণ করছে। ছেলে মেয়েরা প্রাইভেট পড়তে যেতে পারছে না ভয়ে।
আক্রান্ত প্রবীণ আনোয়ারা বিবি বলেন, তিনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন আচমকা কোথা থেকে নেমে এসে তার পা ধরে ফেলে। তিনি পড়ে যান। তাঁকে আঁচড়ে দেয়। আবার পরে গিয়েও আঘাত পান। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ইনজেকশন চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামাপদ মল্লিক বলেন, গোকুলগ্রামের জেলে পাড়া থেকে মুসলিম পাড়ায় বেশি ঘোরাফেরা করছে হনুমান। এখন একটা না দুটো আছে বোঝা যাচ্ছে না। তবে হনুমানটির আক্রমণে ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ, বনবিভাগের কর্মীরা ৩ দিন এসেছিলেন।
তিনি জানান, অনেক চেষ্টা করেও ঠিক মতো চিহ্নিত করতে না পেরে ঘুম পাড়ানি গুলিও করতে পারেন নি। তাই ধরতে না পেরে চলে যান তাঁরা। তিনি দাবি করেন, যদি তারা ক্যাম্প করে থেকে হনুমানটি কে ধরেন তাহলে গ্রামের মানুষ স্বস্তি পাবেন।