রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে পরিষেবা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। জরুরি ওয়ার্ডে আসা রোগীদের কোনও নির্দিষ্ট হাসপাতালের নাম উল্লেখ না করেই অন্যত্র চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে রোগীরা অসহায় হয়ে পড়ছেন। কূলকিনারা পাচ্ছেন না চিন্তিত রোগীদের আত্মীয়রা।
গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে একজন ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুন করার অভিযোগে শুরু হওয়া কর্মবিরতি মঙ্গলবার ২৫ তম দিনে পড়েছে। ক'য়েকটি মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ক'য়েকশ বেড খালি থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না। এছাড়া, ওপিডি (আউটডোর পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট) এবং ল্যাবের কাজও ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
জানা গেছে, ক্যান্সারের রোগীদেরও ভর্তি নিতে চাইছে না নীলরতন হাসপাতাল। অথচ ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল রোগীর। কিন্তু পরে আর ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে কোনও সদুত্তর দিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল থেকে কলকাতায় রেফার করা হচ্ছে স্নায়ু-সহ একাধিক গুরুতর রোগে আক্রান্তদের। কিন্তু কলকাতায় এসে তাঁরা আতান্তরে পড়ছেন।
এদিকে, জুনিয়র ডাক্তারের অভাবে ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের জন্য সমস্ত রোগীর চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের একজন সিনিয়র চিকিৎসক জানান, একই সময়ে একাধিক গুরুতর রোগী এলে তাদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
হাসপাতালগুলির সূত্রে খবর, কিছু কিছু রোগী চিকিৎসার জন্য ৫-৭ দিন ধরে অপেক্ষায় রয়েছেন। ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে গেলে বলা হচ্ছে এসএসকেএম-এ নিয়ে যেতে, সেখানে গেলে বলা হচ্ছে অন্য কোথায়। এভাবেই ঘুরছেন অনেকে। কিন্তু ভর্তি করাতে পারছেন না। কেউ কেউ ধার-দেনা করে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাচ্ছেন। কিন্তু সেই সামর্থ্য যাদের নেই, তাঁরাই পড়েছেন সবথেকে বিপদে। সূত্রের খবর, সন্তানসম্ভবাদেরও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অভাবী রোগীরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও লক্ষণ দেখতে পাচ্ছেন না।