দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির গ্রামবাসীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক কাটল। সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা রয়্যাল বেঙ্গল বাঘটি ফের জঙ্গলে ফিরে গেছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। মাকড়ি নদী পেরিয়ে বাঘটি আজমলমারি ১১ গভীর জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে।
বাঘের পায়ের ছাপ দেখেই নিশ্চিত বন দফতর
বুধবার সকাল থেকেই বাঘের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে বন বিভাগের দল। প্রথমে জলপথে অনুসন্ধান চালিয়ে মাকড়ি নদীর পারে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান তাঁরা। এই ছাপের ভিত্তিতেই নিশ্চিত হওয়া যায় যে বাঘটি নদী পার হয়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, “বাঘটি উত্তর বৈকুণ্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গল থেকে মাকড়ি নদী পেরিয়ে আজমলমারি-১১ গভীর জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। গ্রামবাসীরা এখন নিরাপদ।"
বাঘের গ্রামে প্রবেশ এবং আতঙ্ক
সোমবার সকালে কুলতলির মৈপিঠের বৈকুণ্ঠপুর পঞ্চায়েতের শ্রীকান্তপল্লি ও কিশোরীমোহনপুর এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছিল। এরপর গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে বন দফতরকে খবর দেন। বন দফতরও দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং তাদের তল্লাশি অভিযানে নামে। গত দু’দিন ধরে জঙ্গলের বিভিন্ন অংশে অনুসন্ধান চালিয়েও বাঘের সরাসরি সন্ধান মেলেনি। তবে বাঘটি মাঝে মাঝে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল—কখনও গর্জনের মাধ্যমে, আবার কখনও পায়ের ছাপ ফেলে।
বাঘ তাড়ানোর বন বিভাগের চেষ্টা
বাঘটিকে তার ডেরায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বন দফতর একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। শব্দবাজি ফাটিয়ে বাঘটিকে জঙ্গলমুখী করার চেষ্টা চালানো হয়। উত্তর জগদ্দল লাগোয়া নদীর ধারে বাঘের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর সেখানে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। বাঘটিকে ধরার জন্য খাঁচাও পাতা হয় এবং টোপ হিসেবে ছাগল রাখা হয়। তবে বুধবার সকালে দেখা যায় বাঘটি সেই এলাকা ছেড়ে নদী পেরিয়ে জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে।
গ্রামবাসীদের জন্য স্বস্তি
বাঘটির গ্রামে প্রবেশের খবর শোনার পর থেকেই কুলতলির গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। পুলিশ এবং বন বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সূর্যাস্তের পরে বাইরে না যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবে বাঘটি জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর গ্রামবাসীরা স্বস্তি পেয়েছেন।