আয়কর দফতরের তল্লাশিতে কত টাকা উদ্ধার হর সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসের বাড়ি থেকে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে। বুধবার সকাল থেকে আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা বায়রন বিশ্বাস এবং তাঁর পরিবারের সাতটি বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। ১৮ ঘণ্টার বেশি সেই তল্লাশি শেষ হয় কাতে সাড়ে এগারোটা নাগাদ। এর পাশাপাশি আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসকে তাঁর ধুলিয়ানের বাড়িতে সকাল থেকে টানা জেরাও করে। আর এই তল্লাশির মাঝেই হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া সাগরদিঘির বিধায়ক।
সূত্রের খবর, বায়রন বিশ্বাসের রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎই কমে যাওয়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ধুলিয়ানের ও২ (ও টু) হাসপাতালে। সেখানে ইমার্জেন্সি বিভাগে বিধায়ককে চিকিৎসা হয়। বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন তিনি। একটানা আয়কর দফতরের হানার মুখে বায়রন বিশ্বাস বুধবার বিকেলের দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দেখতে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের চিকিৎসকদের। মানসিক চাপে এমনটা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছেন এলাকার লোকজন। কিন্তু সন্ধ্যা বাড়ার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসকদের পরামর্শেই তাঁকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে সূত্রে খবর, সাগরদিঘির বিধায়কের সামশেরগঞ্জের বাড়ি ও বাড়ি লাগোয়া বিড়ি কারখানায় প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে ৬০ লক্ষ টাকা। বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে বায়রনের বাড়িতে পৌঁছে যান আয়কর আধিকারিকরা। একযোগে সাগরদিঘির বিধায়কের বিড়ি কারখানা, বাড়ির উল্টোদিকে চা কোম্পানির অফিস, বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে সামশেরগঞ্জের হাসপাতাল, রঘুনাথগঞ্জে স্কুল এবং সুতির কেমিক্য়াল হাবে তল্লাশি চালান আয়কর অফিসাররা। সূত্রের খবর, বিধায়কের একাধিক ঠিকানায় হানা দিয়ে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শেষ হয় আয়কর-অভিযান।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে শেষ সপ্তাহে সাগরদিঘির প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর বাম কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হয়ে বিধানসভার উপ নির্বাচনে বয়ইরন বিশ্বাস প্রায় ২৮ হাজার ভোটে জয়লাভ করেন। কিন্তু তার কিছুদিন পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন বায়রন বিশ্বাস। বায়রন এলাকার বড় শিল্পোদ্যোগী হিসেবেই পরিচিত। মুর্শিদাবাদের প্রসিদ্ধ বিড়ি শিল্পোদ্যোগী বাবর আলি বিশ্বাসের বড় ছেলে বায়রন বিশ্বাস। তাঁর বাবা মনে করেন ছেলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন।