ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপিতে বড়সড় রদবদল ঘটছে। সুকান্ত মজুমদারের উত্তরসূরি হিসেবে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করা হবে বৃহস্পতিবার। ইতিমধ্যেই নতুন বিজেপি রাজ্য সভাপতি হিসেবে শমীক ভট্টাচার্যের নাম উঠে এসেছে। শমীকই যে সুকান্তের উত্তরসূরী হতে চলেছেন, সেই জল্পনা ক্রমেই জোরালো হয়েছে। বুধবার মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছেন শমীক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার নতুন রাজ্য সভাপতিকে বরণ করা হবে। ছাব্বিশের বড় নির্বাচনের আগে শমীককেই কেন রাজ্য সভাপতি হিসেবে বেছে নিচ্ছে পদ্ম শিবির? নেপথ্যে কোন কৌশল কাজ করছে?
বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীকই?
সূত্রের খবর, রাজ্যসভার সাংসদ শমীককে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি করা নিয়ে দলের অন্দরে ঐক্যমত তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে শমীকের বৈঠকের পর তাঁর রাজ্য সভাপতি হাওয়া নিয়ে জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে। রাজ্য সভাপতি হিসেবে সুকান্তর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। সুকান্ত বর্তমানে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। এমন একটা সময়ে রাজ্য বিজেপিতে নতুন সভাপতি বাছাই করা হচ্ছে।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি হওয়ার দৌড়ে শমীক কেন এগিয়ে?
সূত্রের খবর, দলের প্রতি শমীকের আনুগত্য এর প্রধান কারণ। পাশাপাশি শমীকের নিপাট বাঙালি ভদ্রলোকের ভাবমূর্তিও এক্ষেত্রে ফ্যাক্টর বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান এবং বাংলা বিজেপির তথাকথিত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে তাঁর ভাবমূর্তি আলাদা।
শমীক দীর্ঘদিনের পোড়খাওয়া রাজনীতিক। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বক্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নজর কেড়েছে। ২০১৪ সালে অন্য কোনও দলের সমর্থন ছাড়াই সরাসরি লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাজিত করেছিলেন শমীক। তিনি বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। এর পরে, ২০১৬ সালে শমীক একই আসন থেকে তৃণমূলের কাছে নির্বাচনে হেরে যান। শোনা যায়, তৃণমূলের তরফ থেকে শমীককে বিজেপি ছেড়ে টিএমসিতে যোগদানের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শমীক বিজেপি ছাড়েননি। এবং দলের একজন অনুগত কর্মী হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন।
হাওড়া জেলার বাসিন্দা শমীক গত ৪০ বছর ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত। এর আগে তিনি আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৫ সালে বিজেপিতে পথচলা শুরু হয়েছিল শমীকের। তিনি ভাল বক্তাও বটে। যে কোনও বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ও জ্ঞান আলাদা ছাপ ফেলেছে।