সন্দেশখালিতে অবৈধ ভাবে জমিদখলের চলমান তদন্তে শাহজাহান শেখের ভাই সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে বুধবার কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) সমন জারি করেছে। এই কেলেঙ্কারিতে সিরাজুদ্দিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপর থেকে সে পলাতক।
সিবিআইয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "জমি দখলের মামলায় আমরা শাহজাহানের ভাইকে ৬ মে কলকাতা অফিসে হাজির হওয়ার জন্য ডেকেছি। আমাদের আধিকারিকরা তাঁকে খুঁজতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেখানে ছিলেন না।" এর পরেই তাঁর বাড়িতে নোটিশ সাঁটিয়ে দেয় সিবিআই।
বুধবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালির 'শাহজাহান মার্কেটে' গিয়েছিল CBI অফিসারদের একটি দল। এ ঘটনায় দোকানদারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এসব দোকানদার শাহজাহান শেখের ঘনিষ্ঠ। এই কেলেঙ্কারিতে শাহজাহানের ভাইয়েরও ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ করছে সিবিআই।
কেলেঙ্কারির তদন্তে প্রায় প্রতিদিনই সন্দেশখালিতে আসছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা। কলকাতা হাইকোর্ট মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং সন্দেশখালিতে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। আদালত সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং সন্দেশখালিতে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তদন্ত করে একটি বিস্তৃত রিপোর্ট জমা দিতে। ৫ জানুয়ারি, ইডি রেশন কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে তৃণমূল কংগ্রেসের বরখাস্ত নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে গিয়েছিল তখন জনতা আক্রমণ করেছিল।
শাহজাহান শেখ এই হামলায় উস্কানি দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। শেখ তৃণমূলের একজন শক্তিশালী ও প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি সন্দেশখালি ইউনিটের টিএমসি সভাপতিও ছিলেন। তার বিরুদ্ধে তার এলাকার নারীদের যৌন শোষণ এবং জোরপূর্বক মানুষের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতা হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের আদেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল, কিন্তু আদালত তা স্থগিত করতে অস্বীকার করেছে। সোমবার মামলার শুনানির সময় আদালত জানায়, সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্ত চলবে। হাইকোর্টের আদেশের ওপর কোনো স্থগিতাদেশ থাকবে না।
আদালত বলেছে, কোনও ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষায় রাজ্য সরকার কীভাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। এখন গ্রীষ্মের ছুটির পর সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে আরও শুনানি হবে।
ইতিমধ্যেই সন্দেশখালিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকদের উপর হামলার মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। ৫ জানুয়ারির ঘটনায় তিনটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। হাইকোর্ট নিজেই সিবিআই তদন্ত পর্যবেক্ষণ করছে। পাশাপাশি তদন্তকারী সংস্থাকে একটি বিস্তৃত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।