সেদিন ছিল কৌশিকী অমাবস্যা। সেদিনই গ্রেফতার করা হয় আরজি কর মেডিক্যালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই সন্দীপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সঞ্চারিত হয়েছিল। তবে আরজি করে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সন্দীপকে। কৌশিকী অমাবস্যায় প্রথম বার সিবিআই হেফাজতে রাত কাটালেন সন্দীপ। ঈশ্বরে বিশ্বাসী সন্দীপ সেদিন সিবিআইয়ের কাছে বিশেষ অনুরোধ করেছিলেন। সেই মতো সন্দীপের অনুরোধ রেখেওছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সূত্রের খবর, সোমবার কৌশিকী অমাবস্যার রাতে কালীপুজো ছিল। তাই রাতের খাবারে নিরামিষ খেতে চেয়েছিলেন সন্দীপ। সেই মতো সন্দীপকে নিরামিষ খাবার দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, ভগবানে খুব বিশ্বাস সন্দীপের। প্রায় রোজ সকালে বেলেঘাটায় তাঁর বাড়ির কাছে বালাজি মন্দিরে যেতেন তিনি।
তবে সেদিন নৈশ্যভোজ সারার পর দু'চোখের পাতা এক করতে পারেননি সন্দীপ। ঘুমোতে গেলেও তাঁর খুব একটা ঘুম হয়নি বলেই খবর। সূত্রের দাবি, 'সিবিআই হেফাজতে প্রথম রাতে সন্দীপ না ঘুমিয়েই কাটিয়েছেন। গ্রেফতারি হয়তো কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। সময় লাগবে। এটা খুবই স্বাভাবিক যে, যাঁদের জেল বা হেফাজতে থাকার অভিজ্ঞতা নেই, তাঁদের পক্ষে এটা মেনে নিতে না পারাটা খুব স্বাভাবিক।'
কলকাতার নিজাম প্যালেসের ১৫ তলায় সিবিআইয়ের লক-আপে রাখা হয়েছে সন্দীপকে। আপাতত ৮ দিনের হেফাজতে রয়েছেন সন্দীপ। তাঁর লক-আপের ভিতর ও বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে ৪ জন সশস্ত্র সিআরপিএফ জওয়ানকে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর তাঁকে ফের আদালতে হাজির করানো হবে।
সূত্রের খবর, গ্রেফতারির পর সন্দীপের বিরুদ্ধে যে জনরোষ তৈরি হয়েছে, তাতে আরও মুষড়ে পড়েছেন সন্দীপ। মঙ্গলবার সন্দীপকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় 'চোর, চোর' স্লোগান দেওয়া হয়। পরে আদালত থেকে সন্দীপকে বার করানোর সময় তাঁকে সপাটে চড় কষান এক ব্যক্তি। এই ঘটনার পর সন্দীপ আরও বিচলিত বোধ করেছেন বলে খবর।
সূত্র মারফৎ আরও জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার আদালত থেকে ফেরার পর চুপচাপই ছিলেন সন্দীপ। সকালে সন্দীপকে চা-বিস্কুট দেওয়া হয়। তা তিনি খেয়েছেন। বুধবার সকাল থেকে সন্দীপকে ফের জেরা করেছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দুর্নীতি দমন শাখার ৩ জন আধিকারিক জেরা করছেন। আরজি করে আর্থিক নয়ছয়ের যাবতীয় অভিযোগ সন্দীপ জেরায় অস্বীকার করেছেন বলে দাবি। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ।