দেশের আইন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে ভারতীয় দণ্ডবিধির (Indin Penal Code) খোলনোলচে বদলে ফেলতে সংসদে নয়া বিল 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা' পেশ করেছে মোদী সরকার। এ বার কেন্দ্রের প্রস্তাবিত 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা'-র তীব্র বিরোধিতা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, নীরবে অত্যন্ত কঠোর নাগরিক বিরোধী বিধান প্রবর্তনের একটি গুরুতর চেষ্টা করা হচ্ছে।
X হ্যান্ডেলে 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা' প্রসঙ্গে মমতা লিখলেন, 'ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের প্রতিস্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তৈরি খসড়াগুলি পড়েছি। স্তম্ভিত হয়েছি, নীরবে অত্যন্ত কঠোর নাগরিক বিরোধী বিধান প্রবর্তনের একটি গুরুতর প্রচেষ্টা রয়েছে। আগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ছিল, এখন, এই বিধানগুলি প্রত্যাহারের নামে, তারা প্রস্তাবিত ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় আরও কঠোর এবং স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা প্রবর্তন করছে, যা নাগরিকদের আরও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।' কেন্দ্রকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী লিখছেন, 'বর্তমান আইনগুলি কেবল আকারে নয়, আত্মার মধ্যেও ঔপনিবেশিকতা মুক্ত হওয়া উচিত। ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক অবদানের জন্য এই খসড়াগুলি গুরুত্ব সহকারে অধ্যয়ন করার জন্য দেশের আইনবিদ এবং জনসাধারণ কর্মীদের অনুরোধ করুন। সংসদে আমার সহকর্মীরা স্থায়ী কমিটিতে এই বিষয়গুলি উত্থাপন করবেন যখন এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। অভিজ্ঞতার আলোকে আইনের উন্নতি করা দরকার, কিন্তু ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ববাদকে দিল্লিতে পিছনের দরজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।'
বস্তুত, ভারতীয় দণ্ডবিধির আমূল পরিবর্তন চাইছে মোদী সরকার। কার্যত খোলনলচে বদলে ফেলার পরিকল্পনা। লোকসভায় নয়া বিল ইতিমধ্যেই পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঔপনিবেশিকতার চিহ্ন ঝেড়ে ফেলে ভারতের ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমকে ঢেলে সাজাতে একাধিক ধারা বদলের প্রস্তাব রয়েছে এই বিলে।
মূলত, ধারা ৩০২ (খুন), ৪২০ (প্রতারণা) কিংবা ৩৭৬ (ধর্ষণ), IPC-র এই ধারাগুলি ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) অনুযায়ী বদলে যাবে। একাধিক পুরনো এবং নতুন ধারা অদলবদল হতে চলেছে। এখনও চূড়ান্ত না হলেও এই ধারাগুলি অদলবদল নিয়ে সংসদে চর্চা হবে। নয়া আইনে ১৮ বছরের কম বয়সি মহিলাকে ধর্ষণের সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা আজীবন কারাদণ্ড। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ২০ বছর থেকে আজীবন জেলের সাজার কথা বলা হয়েছে। এমনকী, মহিলাদের হার বা মোবাইল ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার বিচারের জন্য রয়েছে নয়া আইন।