শক্তি হারিয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত 'মোন্থা', বাংলায় কতদিন বৃষ্টি চলবে?অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করার পর প্রবল ঘূর্ণিঝড় মন্থা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে, যার ফলে উপকূলীয় বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝোড়ো বাতাস বইছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের উপর দিয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড় মোন্থা ১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ঝড়টি শক্তি হারাচ্ছে। পশ্চিম গোদাবরী, কৃষ্ণা এবং পূর্ব গোদাবরী জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সঙ্গে বইছে ঝোড়ো বাতাস। নিচু এলাকাগুলিতে বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বুধবার ভোরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মন্থা অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মাছিলিপত্তনম এবং কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যবর্তী ইয়ানান উপকূলে আঘাত হানে। মধ্যরাতের কিছুক্ষণ পরেই ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যার কারণে গাছপালা উপড়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকটি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে যে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। মোন্থার পরবর্তী প্রভাব তেলঙ্গনা, তামিলনাড়ু, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী কয়েকদিন এই রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে ঝড় না হলেও মোন্থার কারণে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং দমকা ঝোড়ো হাওয়ার জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে হতে পারে ভারী (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) বৃষ্টি। উত্তরবঙ্গেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। বুধবার জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহে বজ্রপাত এবং ঝড়বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলে সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্র যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পূর্ব পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি বিক্ষিপ্তভাবে চলবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইবে। বুধবার দক্ষিণবঙ্গের ছয়টি জেলা, যথাক্রমে হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হবে বর্ধমান, পুরুলিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায়। যা চলবে টানা শনিবার পর্যন্ত। শুক্রবার পর্যন্ত রয়েছে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা। শনিবার থেকে কমবে বৃষ্টিপাত। রবিবার আবার পরিষ্কার আকাশ হয়ে যাবে। মুষলধারে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। ৩১ অক্টোবর উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলাতে অতি ভারী বৃষ্টি অর্থাৎ ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা। ওইদিন ভারী বৃষ্টি হবে মালদা এবং উত্তর দিনাজপুরেও। তার আগে ৩০ অক্টোবর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি জেলাতে। ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবর উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইবে।