আজকের আলোচনা থেকে রফাসূত্র বেরোয় কিনা এখন নজর সেই দিকেই। বাংলায় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে তৃণমূল দলের অন্দরে বাড়ছে চর্চার আবহ। বাড়ছে ফাটলও। সম্প্রতি সেই ফাটলের বড় নাম শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি দল থেকে দূরে গিয়েই কাজ করতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের মন্ত্রীকে। একদিকে বিজেপির বাংলার কুর্সি দখলের তোরজোর, আরেকদিকে দলের মধ্যেই গোষ্ঠীকোন্দল। সব মিলিয়ে এখন শিবির সুসংগত রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ মমতার কাছে। এমতাবস্থায় কিছুটা নমনীয় দলও। সোমবার বিকেলেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলোচনায় বসছেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা ও সাংসদ সৌগত রায়।
শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও তা স্পষ্ট করা হয়নি দল এবং মন্ত্রী কোনও তরফেই। বারবার ঘাসফুল শিবিরের বিভিন্ন নেতার মুখে শোনা গিয়েছে শুভেন্দু স্তুতি। আর পরিবহণ মন্ত্রী নিজে বলেছেন, 'আমি এখনও দলের প্রাথমিক সদস্য। রাজ্য মন্ত্রিসভারও সদস্য। দলের নিয়ন্ত্রকরা আমাকে তাড়াননি। আমিও দল ছাড়িনি। মুখ্যমন্ত্রী আমায় মন্ত্রিসভা থেকে তাড়িয়ে দেননি। আমিও ছাড়িনি।'
শুভেন্দুর কথায়, 'দল করতে বিভিন্ন কারণে গেলে বিভেদ আসে। বিভেদ থেকে বিচ্ছেদও আসে। কিন্তু যতক্ষণ মন্ত্রিসভায় আছি বা দলে আছি, ততক্ষণ কোনও রাজনৈতিক কথা বলা যায় না। আমি সেটা বলতে পারি না।' তৃণমূলের এই দাপুটে নেতাকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনার অন্ত নেই। তার মধ্যে শুভেন্দুর এ ধরনের মন্তব্য রহস্য উস্কে দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শুভেন্দু ঠিক কী চাইছে তা জানার দায়িত্ব পড়েছে সৌগত রায়ের উপরেই। আসলে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের প্রবীণ নেতার কথায় শুভেন্দু সরাসরি মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রকাশ করায় নির্বাচনের আগে অস্বস্তিতে পড়েছে দল। তাই 'দলেই আছেন রাজ্যের মন্ত্রী' একথা বারংবার শোনা গিয়েছে মমতার ব্রিগেডের মুখে।
দলীয় সূত্রে খবর, নন্দীগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া শুভেন্দুর হাতে ২৩টি জেলার মধ্যে ১৮টি জেলায় ক্ষমতা রয়েছে। তাই রাজ্যের মন্ত্রীকে ধরে রাখাই একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের ক্ষমতায় ফিরে আসার মূল চাবিকাঠি। সেই ৪৫টি আসন হাতছাড়া হওয়া। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, সেই কারণেই কী শুভেন্দুকে হাতে রাখতে চাইছে দল? সমীকরণ যাই হোক না কেন, আজকের আলোচনা থেকে রফাসূত্র বেরোয় কিনা এখন নজর সেই দিকেই।