CAA ক্যাম্প খুলে তোলা হচ্ছে টাকাএসআইআরের আবহে বিভিন্ন জায়গায় সিএএ-র জন্য আবেদন বাড়ছে। আর এই CAA ফর্ম পূরণের জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে। অভিযোগ স্থানীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে। বাসন্তীর উত্তর মোকামবেরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পালবাড়ি এলাকায় রীতিমতো ক্যাম্প খুলে চলছে সিএএ-র জন্য ফর্ম পূরণ। অভিযোগ, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের কর্মীরা কারও কাছ থেকে হাজার, কারও থেকে বারোশো টাকা নিচ্ছেন। এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের অভিযোগ, যাঁদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই, তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তবে ক্যাম্পের কর্মীদের দাবি, কোনও অনৈতিক কাজ করা হচ্ছে না ক্য়াম্প থেকে।
তৃণমূলের দাবি, SIR-এর আবহে বহু মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। সেই সুযোগে বিজেপি ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চের কর্মীরা মানুষকে আরও ভয় দেখাচ্ছেন। যাঁদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই, তাঁদেরকে টার্গেট করে ভয় দেখানো হচ্ছে। তাঁরা যাতে সিএএ ফর্ম ফিলআপ করে নাগরিকত্বের আবেদন করেন সেই বিষয়ে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, যাঁরা এই আবেদন করছেন তাঁদেরকে সিএএ আবেদনের পাশাপাশি হিন্দুত্বের সার্টিফিকেটও বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। বাসন্তী ব্লক তৃণমূল নেতা রাজা গাজি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে এখনও সিএএ চালু হয়নি। পরিকল্পিতভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে বিজেপির লোকজন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের ব্যানারে এই ক্যাম্প করে সিএএ ফর্ম ফিল-আপ করছেন। মোটা টাকা নিয়ে এই ফর্ম ফিল-আপ করানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বাসন্তী ব্লক তৃণমূলের নেতারা। পাশাপাশি এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে বলে দাবি তাঁদের।
যদিও হিন্দু জাগরণ মঞ্চের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তিন বছর আগেই দেশজুড়ে সিএএ চালু হয়েছে। বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে বিতারিত হয়ে এদেশে এসেছিলেন। তাই তাঁদেরকে নির্ভরতা দিতে এই সিএএ চালু করা হয়। এই ক্যাম্পের উদ্যোক্তা তথা হিন্দু জাগরণ মঞ্চের গুরুত্বপূর্ণ কার্যকর্তা বিকর্ণ নস্কর বলেন, 'সিএএ ফর্মই ফিলআপ করতে গেলে কোর্টের কাগজ লাগে। সেটা তৈরি করতে টাকা লাগে। অনলাইনে ৫০ টাকা চার্জ লাগে। রয়েছে বিদ্যুৎয়ের খরচ। তাছাড়া কয়েকটি ছেলে সকাল থেকে এই ফর্ম ফিলআপের জন্য খাটছে, তাঁদেরও পারিশ্রমিক রয়েছে। সব মিলিয়ে নূন্যতম একটা খরচ নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, 'কাউকে ভয় দেখিয়ে এই ফর্ম ফিলআপে বাধ্য করা হচ্ছে না। যাঁরা মনে করছেন যে তাঁরা অনেকদিন ধরে এদেশে থাকলেও যথাযথ নথি তাঁদের কাছে নেই, তাঁরা আবেদন করছেন।
ফর্ম ফিলআপ করতে আসা তেজেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, '২০০০ সালে বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসেছি। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড হলেও ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আমার পরিবারের কারও নাম নেই। তাই এদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য এখানে ফর্ম ফিলআপ করতে এসেছি।'
রিপোর্টার- প্রসেনজিৎ সাহা