মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ভোটার তালিকায় SIR বা স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন আজ থেকে শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। BLO রা বাড়ি বাড়িতে গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দেবেন। সেই ফর্ম ফিল আপ করে জমা দিতে হবে সাধারণ মানুষকে। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, দেশের আরও ১১টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও একই সঙ্গে শুরু হয়েছে এসআইআরের কাজ। ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। যাঁরা কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন, তাঁরা অনলাইনেও এমুনারেশন ফর্ম ফিল আপ করতে পারবেন। কমিশনের তরফে ইতিমধ্যে ভোটার লিস্ট ম্যাপিং এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে শেষ ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়েছিল হয়েছিল ২০০২ সালে। ওই সময়ের ভোটার তালিকার তথ্য অনেক আগেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের (পুরানো) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছিল। নতুন ওয়েবসাইটেও ওই তথ্য আপলো়ড করা রয়েছে। কমিশন যখন SIR জোরকদমে চালু করে দিল,তখন বাংলায় এই ইস্যুতে রাজনীতিও তুঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে তীব্র আন্দোলন করা হবে দিল্লিতে। আজ এই ইস্যুতে মহামিছিলে নামছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওদিকে বিজেপি বারবার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, অবৈধ বাংলাদেশি ভোটারদের তাড়ানো হবে এই প্রক্রিয়ায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ১ কোটির বেশি নাম বাদ পড়বে। বসে নেই বামেরাও। তারা নামাচ্ছে রেড ভলান্টিয়ার। এঁরা SIR সম্পর্কিত কোনও নথির অসুবিধায় সাধারণ মানুষকে সাহায্য করবে বলে দাবি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভোটমুখী পশ্চিমবঙ্গে এখন একটাই ইস্যু SIR। এই সম্পর্কিত সব আপডেট পেতে রইল Live Blog।
মমতা বললেন, সবাইকে ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না। একমাত্র যারা অফিসিয়াল বিএলও, তাদের দেবেন। আমরা এলাকায় এলাকায় তৃণমূল থেকে হেল্পডেস্ক করে দিয়েছি। আপনাদের কোনও অসুবিধা হলে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
অমিত শাহ ও বিজেপি-কে নিশানা করে মমতা বললেন, একজন দেশে মীরজাফর রয়েছে। যার হাতে দাঙ্গার রক্ত লেগে আছে। মানুষ খুনের রক্ত লেগে আছে। আমি নাম নেব না। নিজেদের পার্টির মধ্যেই তো কত বিভেদ। আসলে ওদের বাংলার উপরে খুব রাগ। কারণ ওরা জানে, সব রাজ্যকে বোকা বানাতে পারলেও, ভয় দেখাতে পারলেও, বাংলাকে পারবে না। ইতিহাস বলছে, ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল ভারতের রাজধানী। ব্রিটিশরা দিল্লিতে রাজধানী নিয়ে চলে গিয়েছিল, কারণ বাঙালির সঙ্গে পারছিল না ব্রিটিশরা। ওরা ভাবছে, যে ভাবে হোক ২ কোটির নাম বাদ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিই, ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিই, তারপর ক্ষমতা দখল করে নিই। লোকসভায় তৃণমূল নাকি পেয়েছে ৪০ শতাংশ ভোট, ওরা নাকি পেয়েছে ৩৯ শতাংশ ভোট। ২০০৪ সালে আমি একা ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে একা জিতেছিলাম। আর কেউ জেতেনি। আজ স্বাধীনতার এতদিন পরে আমাকে প্রমাণ দিতে হবে, আমি ভারতীয় নাগরিক কি না?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, আধার কার্ড করতে কত টাকা লেগেছিল? ১ হাজার টাকা লেগেছিল। সবার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়েছিলে। চুরি করেছিল কমিশন। তুমি জনতার কাছ থেকে আধার কার্ডের জন্য টাকা নিয়ে এখন কেন বলছ, আধার কার্ড প্রমাণপত্র নয় SIR-এ। যদি এই ভোটার লিস্ট মিথ্যে, তাহলে আপনার সরকারও মিথ্যে। এই লিস্টেই ভোট হয়েছে এতদিন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের কটাক্ষ করে বললেন, লোকসভায় হঠাত্ নির্বাচন কমিশন ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়িয়ে দিল। কোন বাবু আমি বলছি না, প্রথম বাবু হতে পারে, দ্বিতীয় বাবু হতে পারে, আবার যে বাবু ফিডিং বোতলে দুধ খায়, সেই বাবুও হতে পারে। কিন্তু দালালিরও একটা লিমিট থাকে। আমি চেয়ারকে সম্মান করি।
মঞ্চে এবার ভাষণ দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআর ইস্যুতে মমতার বার্তা, 'অজস্র সাধারণ মানুষ এই মিছিলে হেঁটেছেন। নয়না এসেছে। সুদীপদা আসতে পারেননি, কারণ উনি অসুস্থ। সবাই ভাবছেন, আমাদের নামটা বাদ যাবে না তো? পরিযায়ী শ্রমিকরা ভাবছেন, আমার নামটা বাদ যাবে না তো? বাংলা ভাষায় কথা বললেই কেউ বাংলাদেশি হয়ে যায় না। যেমন উর্দু ভাষায় কথা বললেই, সে পাকিস্তানি হয়ে যায় না। ১৯৪৭ সালের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান,ভারত কিন্তু একসঙ্গে ছিল। বিজেপির কোটি কোটি টাকা। জনগণকে টাকা দেয় না। সবচেয়ে বড় লুঠেরা।'
গাছে উঠতে গিয়ে, বাজ পড়ে কেউ মারা গেলেও বলছে SIR এর ভয়ে: শুভেন্দু অধিকারী
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, 'আগামী নির্বাচনের লড়াই হল বিজেপি-কে শূন্য করার লড়াই। বাংলা থেকে ৭৭ জন জিতেছিল। এবারে ওদের শূন্যে নামাতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এনআরসি হতে দেব না। পেরেছে অমিত শাহ? পেরেছে বিজেপি?'
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, 'দুদিনের ব্যবধানে তৃণমূল যদি এত বড় মিছিল করতে পারে, তাহলে আগামী দু মাসে দিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেস কী করতে পারে, তা নিয়ে বিজেপি বন্ধুদের সতর্ক করব। বাংলার মানুষের আশীর্বাদ নিয়েআমপা রাস্তায় নেমেছিলাম। ৭ জন আত্মহত্যা করল, তাদের ভোটার তালিকায় নাম ছিল। নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। যাকে যখন ইচ্ছে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। এর জবাব বাংলা দেবে। তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লি যাবে।'
এসআইআর ইস্যুতে মিছিল শেষে সভা করছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে উঠেই বললেন, 'মতুয়া সম্প্রদায় থেকে যাঁরা এসেছেন মিছিলে, তাঁদের সামনে আনুন।'
রেড রোডে প্রতিবাদ মিছিল তৃণমূলের। হাঁটছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের নেতানেত্রীরা।

SIR নিয়ে হেল্পলাইন চালু করল BJP। তাদের পক্ষ থেকে মানুষকে সাহায্য করার জন্য এই হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। এমনটাই জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সেই হেল্পলাইন নম্বরটিও জানান। সেই নম্বরটি হল ০৮০৬৫৯০৭৪৫৪। পাশাপাশি আগামি কয়েকদিনে জেলা স্তরেও হেল্পলাইন চালু হবে দাবি করেন তিনি।
রেড রোডে পৌঁছে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই SIR বিরোধিতায় মিছিল শুরু হবে।
'জামাতের মিছিল, রাজনৈতিক নয়,' TMC-র মিছিল নিয়ে তোপ শুভেন্দুর। সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারা ক্যামেরা নিয়ে যান। ওখানে মিছিলে কারা হাঁটছেন লক্ষ্য করুন। তাহলেই দেখবেন একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকেরা রয়েছেন।'
আপনি কি কর্মসূত্রে বাড়িতে থাকতে পারেন না? তাহলে অনলাইনে SIR ফর্ম ফিলআপ করা ছাড়া গতি নেই। যদিও আজ চাইলেই সেই সুবিধা মিলবে না। অনলাইনে ফর্ম ফিলআপ করতে চাইলে আরও ২ দিন অপেক্ষা করতে হবে। আসলে কমিশনের ওয়েবসাইটে কিছু কাজ চলছে। তাই দুই দিন পর থেকেই অনলাইনে ফর্ম ফিলআপ করা যাবে।
BLO-দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে আবেদন জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলকে কটাক্ষ করে বললেন, 'ওটা জামাতিদের মিছিল হবে। বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ থেকে বাংলাদেশি মুসলমানদের গাড়ি করে আনা হচ্ছে। '
আপনার নাম যদি ২০০২ ভোটার লিস্টে থাকে, তাহলে এ বার আর কোও নথি দেখানোর প্রয়োজন নেই। সেই লিস্টের প্রতিলিপি দেখালেই চলবে। নাম থাকবে লিস্টে। এছাড়া বাবা-মায়ের নামও যদি ২০০২ ভোটার লিস্টে থাকে, তাহলে বার্থ সার্টিফিকেট ছাড়া অন্য কোনও নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেই জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলি শুরু করে দিলেন বিএলও-রা। কলকাতা সহ সব জেলায় গ্রাউন্ডে নেমে পড়েছেন তাঁরা। ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এনুমারেশন ফর্ম বিলি। এনুমারেশন শেষে ৯ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে খসড়া ভোটার তালিকা। সেই তালিকায় নিয়ে কোনও আপত্তি বা প্রশ্ন থাকলে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে জানানো যাবে।
আজ ৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার, দুপুর ১.৩০ মিনিটে মিছিল শুরু হবে রেড রোড (Red Road)-এ বি আর আম্বেদকরের মূর্তি থেকে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতোই ৪ নভেম্বর অর্থাৎ আজ থেকে বাংলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে SIR-এর কাজ শুরু করলেন BLO-রা। মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে শুরু হলো SIR-এর পরবর্তী ধাপ। বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের বাড়িতে পৌঁছলেন বুথ লেভেল অফিসার বা BLO-রা। সঙ্গে রয়েছেন বুথ লেভেল এজেন্ট বা BLA। এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে সাধারণ মানুষকে পুরো প্রক্রিয়া বুঝিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।
SIR ইস্যুতে আজ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলকে কটাক্ষ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। বললেন, 'এর মধ্যে বিতর্ক কিছুই নেই। বাংলার মানুষ চান, এসআইআর হোক। মমতা জুহু বিচ, অ্যান্টার্কটিকাতেও মিছিল করতে পারেন, কিন্তু বাংলায় এসআইএর কোনও শক্তি রুখতে পারবে না। আপনারা চাইছেন রোহিঙ্গারাও ভারতের নাগরিক হয়ে যাক?'