এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির জেরে চাকরি হারানো শিক্ষকদের তালিকায় আরও এক মর্মান্তিক মৃত্যু। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন অমুইপাড়া উদ্বাস্তু বিদ্যাপীঠের শিক্ষক প্রবীণ কর্মকার। চাকরিহারাদের দাবি, চিকিৎসার অক্ষমতা, মানসিক চাপ এবং সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে দুশ্চিন্তাই তাঁর মৃত্যুর মূল কারণ।
প্রবীণবাবু মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের হরিদাস নগরের বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হয় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি, সেই তালিকাতেই ছিলেন প্রবীণ। চাকরি হারানোর পর থেকে প্রতিবাদ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি।
চাকরিহারাদের তরফে এক প্রেস বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, 'প্রবীণ কর্মকারের দুটি কিডনিতেই সমস্যা ছিল। কিন্তু চাকরি না থাকায় চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। তার উপর মুখ্যমন্ত্রীর ৩০ মে-র মধ্যে পুনর্নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ঘোষণা এবং নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত তাঁকে মানসিকভাবে আরও বিপর্যস্ত করে তোলে। এই যন্ত্রণাই তাঁর মৃত্যু ত্বরান্বিত করেছে।'
চাকরিহারাদের অভিযোগ, যোগ্য প্রার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা দিতে বাধ্য করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অবমাননাকর। এতদিন শিক্ষকতা করে যাওয়ার পরও নতুন করে পরীক্ষা, তা-ও এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে, এই চাপ সহ্য করতে না পেরেই প্রবীণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার অসুস্থ হয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পর গোটা রাজ্যের চাকরিহারা শিক্ষকরা গভীর শোক ও ক্ষোভে মুখর হয়েছেন। তাঁরা দাবি তুলেছেন, রাজ্য সরকার যেন অবিলম্বে যোগ্য প্রার্থীদের পরীক্ষা ছাড়াই চাকরিতে পুনর্বহাল করে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অমানবিক পরিস্থিতি যেন আর তৈরি না হয়।