scorecardresearch
 

পাহাড়-ডুয়ার্স-সমুদ্র থেকে ফিরছে পর্যটকরা, জবাবদিহি চেয়ে চিঠি Stakeholder-দের

রাজ্যে চালু হলো কড়া কোভিভ বিধি, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি হতেই উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সব জায়গাতেই পর্যটকরা সমস্ত বুকিং বাতিল করে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে।

Advertisement
ছবি সৌজন্য-পর্যটন বিভাগ, শ্চিমবঙ্গ সরকার ছবি সৌজন্য-পর্যটন বিভাগ, শ্চিমবঙ্গ সরকার
হাইলাইটস
  • পাহাড় থেকে সমুদ্র, পর্যটক ফিরছে বাড়িতে
  • আচমকা ধসের আশঙ্কা পর্যটন শিল্পে
  • রাজ্যের কাছে জবাবদিহি দাবি, স্টেকহোল্ডারদের

রাজ্যে চালু হলো কড়া কোভিভ বিধি, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি হতেই উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সব জায়গাতেই পর্যটকরা সমস্ত বুকিং বাতিল করে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। যাঁরা সবে পা রেখেছিলেন পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে, তাঁরা মুষড়ে পড়ছেন। দিঘা পর্যটনকেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার হিড়িক পর্যটকদের, ফের সংকটে পর্যটন শিল্প।

করোনার গ্রাফ ফের রাজ্যে ঊর্ধ্বমুখী। যার জেরে ফের রাজ্যজুড়ে কড়া বিধিনিষেধ চালু করেছে রাজ্য সরকার। এবার এই বিধি নিষেধের গেরোয় পড়ছে উত্তরের একমাত্র শিল্প পর্যটন। রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী সমস্ত পর্যটনকেন্দ্রগুলিকে বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে পর্যটকরা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ রেখেই বাড়ি ফেরার তাড়া শুরু করেছে। তবে হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পর্যটন শিল্প বিপদে পড়বে বলে আশঙ্কা ট্যুর অপারেটরদের। সংগঠনের তরফে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

দেশজুড়ে করোনার কারণে এমনতেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল পর্যটন শিল্প। প্রায় দেড় বছর পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। তার ওপর চলতি মরশুমে পাহাড়ে তুষারপাত হয়। আচমকাই ভিড় বেড়েছিল পাহাড় সহ উত্তরবঙ্গের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। একই সঙ্গে শীতে দিঘা সহ দক্ষিণবঙ্গের পর্যটনকেন্দ্রগুলিতেও ভিড় উপচে পড়ছিল। ফলে লোকসান কাটিয়ে নতুন করে আশার আলো দেখা শুরু করেছিল পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধের কারণে আবারও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে পর্যটন শিল্প বলে আশঙ্কা। পর্যটন ব্যবসায়ীদের আশা এর ফলে আবারও লোকসানের শিকার হতে পারে পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত কয়েক লাখ মানুষ। 

জানা গিয়েছে এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্স মিলিয়ে প্রায় কুড়ি হাজার পর্যটক রয়েছে। দিঘা সহ দক্ষিণবঙ্গের পর্যটনকেন্দ্রগুলি ধরলে  সব মিলিয়ে প্রায় লক্ষাধিক পর্যটক এই মুহূর্তে বাড়ির বাইরে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত হোটেল এবং হোমস্টেগুলিও ৯০ শতাংশ বুকিং হয়ে গিয়েছে। সোমবার থেকে রাজ্য সরকারের বিধি-নিষেধ কার্যকর হওয়ায় আবারও কোমর ভাঙতে পারে উত্তরবঙ্গের এই ধোঁয়াহীন শিল্পের। 

Advertisement

এই প্রসঙ্গে দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজয় খান্না বলেন, পর্যটকরা কোথাও যদি ঘুরতেই না পারে তাহলে পাহাড়ে থাকতে যাবে কেন। তাই সোমবার থেকেই সকলে যাওয়া শুরু করে দেবেন। রবিবার বেলা হয়ে যাওয়ায় তারা নামতে পারেনি। তবে এভাবে বারবার বন্ধ করলে আমরা আর হোটেল চালাতে পারব না। গঙ্গাসাগর মেলা হতে পারে, আর পর্যটকরা ঘুরতে পারবে না। কড়া নিয়মাবলি লাগু করা যেত কিন্তু বন্ধ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে আমরা।
     
অন্যদিকে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, গত প্রায় দু বছর পর ফের ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্প। সম্প্রতি চলতি মরসুমে গত মাসে তুষারপাতে পাহাড়ের বেড়েছিল পর্যটকদের। এভাবে পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে বন্ধ করে দিলে আবার ও ক্ষতির মুখে পড়বে পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত মানুষেরা। তাছাড়াও আমরা নির্দেশিকাটাই বুঝতে পারিনি স্পষ্টভাবে। পর্যটনকেন্দ্র বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তাই আমরা এ বিষয়ে মুখ্যসচিব সহ পর্যটন সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছি। তবে এভাবে হুটহাট বন্ধ করে দিলে পর্যটনে বিশাল ক্ষতি। আমাদের কাছে ফোন আসা শুরু করে দিয়েছে। আগামিতে অনেকে বুকিং বাতিল করতে পারে। সবে পর্যটন শিল্প মাথাচাড়া দিলো তখনই তৃতীয় ঢেউ বলে ফের বন্ধ করে দেওয়ায় আবার ভেঙে পড়ব আমরা।

অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, "আমরা খুবই চিন্তিত। ইতিমধ্যে আমাদের কাছে নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর থেকেই প্রচুর পর্যটক জানতে চাইছে কী হবে? দীর্ঘ দুই বছর পর পর্যটন অল্প সময়ের জন্য খুলেছিল। কিন্তু ফের এই বিধিনিষেধ আমাদের জন্য বড় ধাক্কা। রাজ্য সরকার যাতে একটু আমাদের কথা চিন্তা করে সেই আবেদন রাখবো।"

 

Advertisement