ফের বিতর্কে তৃণমূলের সুজাতা মন্ডল খাঁ (Sujata Mondal Khan)। অভিযোগ, তিনি রক্তদান শিবিরে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন মোবাইল ফোন। তবে তিনি রক্তদান শিবিরের আয়োজক নন। সেই অনুষ্ঠানের ফেসবুক লাইভ করেছিলেন। আর এরপর শুরু হয় বিতর্ক। উপহার হিসেবে মোবাইল দেওয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন রক্তদানের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন-কর্মী।
শুক্রবার হুগলির আরামবাগে এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। উদ্যোক্তা জিয়াজুর রহমান নামে স্থানীয় ব্য়বসায়ী-সমাজসেবী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুজাতা মন্ডল খাঁ (Sujata Mondal Khan)। তিনি জানান, মানুষ যাতে রক্তদানে আরও এগিয়ে আসে, তাই আয়োজক উপহারের উদ্য়োগ নিয়েছিলেন। তবে এই ঘটনার নিন্দা করেছে ফেডারেশন অফ ব্লাড ডোনার্স অর্গানাইজেশন (ফিবডো)।
উপহার দেওয়ার মধ্যে অন্যায় কিছু দেখছেন না সুজাতা মন্ডল খাঁ (Sujata Mondal Khan)। রবিবার তিনি জানান, যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা হয়তো উপহার পাননি, সেই জ্বলনে অভিযোগ করছেন! ওই উপহারটা তো লোভনীয়। তাই যাঁরা পাননি, তাঁরা এমন বলছেন।
এদিন সুজাতা মন্ডল খাঁ (Sujata Mondal Khan) বলেন, আমি কোনও উপহার দিইনি। তবে ওই অনুষ্ঠানে ছিলাম। তিনি জানান, যিনি আয়োজন করেছিলেন, তিনি সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। যাতে আরও অনেকে রক্তদানে এগিয়ে আসে। সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং বেড়ে যাচ্ছে। অনেক মানুষ খোঁজখবর রাখতে পারছেন না,যোগাযোগ করতে পারছেন না এখন। যাতে যোগাযোগ রাখা যায়, তাই মোবাইল তুলে দিয়েছেন।
সুজাতা মন্ডল খাঁ (Sujata Mondal Khan)-র কটাক্ষ, সমাজের যাঁরা কোনও কাজে লাগে না, তাঁদের এত আপত্তি কোথায় জানি না। যাঁরা রক্ত দিতে এসেছেন, তাঁরা কোনও উপহার পাবেন বলে আসেননি। যাঁরা এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও রক্ত দিচ্ছেন, তাঁদের স্যালুট।
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতির বিচার করে সাপোর্ট করেছিলাম। সেটি উপহার বলুন, তাঁদের উৎসাহ দেওয়া বলুন। উপহার না বলে সেটি দান দেওয়া ভাল। তাঁদের যা-ই দেওয়া হোক না কেন, তা কম।
রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠানে সুজাতা মন্ডল খাঁ (Sujata Mondal Khan) বলেন, আমার ঘরে আমি এসেছি। গর্বের বিষয়, আনন্দের বিষয়। আমি সমাজসেবা করতে পছন্দ করি। যে পেশায় আছি মানে শিক্ষকতা এবং রাজনীতি, সেটাও সমাজসেবা। আরামবাগ তো আমার ঘর। রক্তদান জীবনদানের মতো অনুষ্ঠান। থাকতে পেরে ভাল লাগছে।
এদিন ফিবডোর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরূপ বিশ্বাস জানান, রক্তদান নিয়ে নির্দেশিকায় বলা আছে এমন কোনও জিনিস দেওয়া যাবে না, যার বাজার মূল্য আছে। যা প্রাত্যহিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়, তা দেওয়া যাবে না। কী দেওয়া যেতে পারে, তা বলা আছে।
উপহারে আপত্তি কোথায়? তিনি জানান, উপহার দেওয়া বারণ করা হয়। কারণ যাঁরা দাতা, তাঁদের বক্তব্যের থেকেই তাঁর শারীরিক বিষয় জানা যায়। তারপর রক্ত নেওয়া হয়। করোনার টিকা নেওয়ার নির্দিষ্ট সময় পরে রক্ত দেওয়া যেতে পারে। তবে উপহারের প্রলোভনে কেউ যদি সে ব্য়াপারে না জানান?
তাঁর দাবি, এই ধরনের উপহার দেওয়া হলে কেউ সে ব্য়াপার গোপন করে যেতে পারেন। করোনামুক্ত হওয়ার নির্দিষ্ট সময় পর রক্তদান করা যেতে পারে। তবে প্রলোভনে সেই বিধি ভাঙতে পারেন কেউ।
তিনি বলেন, উপহার দেওয়া হলে রক্তদানের সঙ্গে যে স্বেচ্ছাসেবী বিষয়টি থাকে, সেটি নষ্ট হয়। যেন দেনাপাওনা হয়ে যাচ্ছে। রক্তদান শিবিরে মোবাইল দেওয়া হচ্ছে। গর্হিত কাজ হয়েছে। যিনি যা যাঁরা করেছেন, তাঁরা ঠিক করেননি। সংগঠনের তরফ থেকে নিন্দা করছি।