সুপ্রিম কোর্টে কলকাতা হাই কোর্টের ওবিসি শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত রায় স্থগিত রাখল না। রাজ্যকে নোটিস জারি করা হয়েছে এবং সোমবারের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হলফনামায় রাজ্যকে তিনটি বিষয় জানাতে বলা হয়েছে: ৭৭টি জনজাতিকে ওবিসি তালিকায় যুক্ত করার কারণ, ওবিসি তালিকায় ৩৭টি জনজাতি ও উপজনজাতি অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ব্যাকওয়ার্ড কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিল কিনা এবং রাজ্য কী পদ্ধতি মেনে সার্ভে করেছে।
আগামী ১৬ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি বছরের ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ এক বড়সড় রায় দেয়। নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্র বৈধ কিন্তু ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যের দেওয়া সমস্ত শংসাপত্র বাতিল করা হয়। এর ফলে কয়েক লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হয়ে যায়। ডিভিশন বেঞ্চের দাবি, ২০১০ সালের পরবর্তী ওবিসি সার্টিফিকেট বৈধ নিয়ম মেনে ইস্যু করা হয়নি, তাই শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দেয়।
এই শংসাপত্র ব্যবহার করে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। তবে শংসাপত্র বাতিলের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও প্রভাব পড়েনি। তাঁদের সকলের চাকরি বহাল থাকবে বলেই জানায় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের মতে, ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন অ্যাক্ট ১৯৯৩ অনুযায়ী ওবিসিদের নতুন তালিকা তৈরি করতে হবে এবং সেই তালিকা বিধানসভায় পেশ করে চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে। ২০১০ সালের আগে যে গোষ্ঠীগুলিকে ওবিসি শ্রেণিভুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলি বৈধ থাকছে বলেই জানায় হাই কোর্ট।
হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতে যায় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে রাজ্যের ওবিসি জনগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এখন দেখার বিষয়, পরবর্তী শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং ওবিসি শংসাপত্র নিয়ে রাজ্যের ভবিষ্যৎ কী দাঁড়ায়।