ময়নায় বিজেপি কর্মীকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডাকলো বিজেপি। মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "ময়না থানা এলাকায় সর্বাত্মক বন্ধ হবে, জরুরি পরিষেবা বাদ দিয়ে। পূর্ব মেদিনীপুরে ১০০টি জায়গায় সকাল ১০টা থেকে ১১টা সর্বাত্মক অবরোধ হবে। শুধু জরুরি পরিষেবার গাড়ি ছাড়া। আগামী পড়শু দিন ময়নাতে কালো ব্যাজ লাগিয়ে বিজয় ভুঁইঞার শ্রদ্ধাঞ্জলি আর সিবিআই তদন্তের দাবিতে, অমরনাথের শাস্তির দাবিতে, সৌমেন মহাপাত্র, সাহাজাহান আলির গ্রেফতারি দাবিতে, বড় মিছিল হবে। ১৫ হাজারের মিছিল হবে"।
এদিন রাজ্য সরকার নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্তের দাবি তোলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "আমার মমতার হাসপাতালে পোস্টমর্টমে রাজি নই। সেন্ট্রাল গভর্মেন্টের হাসপাতালে পোস্টমর্টেম করতে হবে। আমরা আদালতে অলরেডি চলে গেছি। পরিবারের লোক এনওসি দেবে না। খুনি মমতার একদম শেষ দেখে ছাড়ব। পরিকল্পনা অমরনাথের। অমরনাথ ও তার সহযোগী হাসান, এদেরকেও ছাড়া হবে না। ঠান্ডা করেছি খেজুরি-নন্দীগ্রাম, ঠান্ডা করেছি মোমিনপুর একবালপুর, এনআইএ হয়েছ শিবপুর-রিষড়া-ডালখোলায়। এখানে কী হচ্ছে শুধু দেখতে থাকুন"।
শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "শুভেন্দু অধিকারী যদি একথা বলেন এবং রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের ওপর যদি ভরসা না থাকে, তাহলে একইসঙ্গে তিনি বলে দিন সমস্ত বিজেপি কর্মীদের, যে আপনাদের শরীর অসুস্থ হলে সরকারি হাসপাতালে যাবেন না। দেখি না আপনার কথা ক'জন শোনে? স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়েছেন আপামর জনতা সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল এবং তাঁরা সেখানে চিকিৎসা পাচ্ছেন। উল্টোদিকে এই পোস্টমর্টেমের যে নিয়মকানুন তা একেবারে বেঁধে দেওয়া আছে। সেই নিয়মে আছে ভিডিওগ্রাফি করতে হবে, যেখানেই হোক না কেন। পোস্টমর্টেম নিয়ম তো হাসপাতাল ব্যাতিরেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা নয়। এর আগেও এসব অনেকরকম অন্যায় আবদার ওনারা করেছেন"।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বাকচায় স্ত্রী ও পুত্রের সামনে থেকেই তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মী বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইঞাকে। রাতেই উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। তারপর থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়। শুরু হয় বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি।
আরও পড়ুন - BJP কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ, ব্যাপক উত্তেজনা ময়নায়